স্বাধীন বাংলা প্রতিবেদক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, জনগণের দেশ জনগণ বুঝে নেবে। দেশে গুম, খুন, মূদ্রাপাচার, নারী পাচার, ধর্ষণসহ সব অন্যায় অত্যাচার দুর্নীতি সব কিছুর একদিন হিসাব দিতে হবে। আজ বুধবার (৮ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকি এবং গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যে বৃদ্ধির প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েলের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরাফত আলী সপু, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের ইয়াছিন আলী, ফখরুল ইসলাম রবিন, এসএম জিলানী, গাজী রেজওয়ানুল হক রিয়াজ, নাজমুল হক অভি প্রমুখ।
এ সময় পদ্মাসেতু নিয়ে অনেক কথা শুনলাম উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, এখন শুনলাম পদ্মাসেতু নাকি আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন করবেন না। পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর নাকি সে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। উপস্থিত নেতাকর্মীদের বলব, এখন আমাদের কাজটা করতে হবে। যে কাজ করলে এই সরকারের পতন হবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আমরা যে আন্দোলন করছি, সেই আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। এক সঙ্গে চলতে হবে। বাংলাদেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে-আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এই স্লোগানকে আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের লক্ষ্য পূরণ না হবে অর্থাৎ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন না হবে ততোক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করেই আমরা ঘরে ফিরব। আমাদের এই আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল উল্লেখ করে গয়েশ্বর আরও বলেন, সম্প্রতি, আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ৭ নভেম্বরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেক বার। কিন্তু সরকারের লোকজন বলতে চাইছে, এটা নাকি তাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমি ক্ষমতাসীনদের বলব, বিএনপি কারো দেহত্যাগে বিশ্বাস করে না।
তিনি বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগে। বিএনপি খুন-খারাপিকে বিশ্বাস করে না। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার মধ্যদিয়ে বন্দীদশা থেকে মুক্ত হয়ে জনগণের কাতারে এসেছেন। ৭ নভেম্বর হচ্ছে দেশপ্রেমিক জনতার একটি স্লোগাণ। এটি গণতন্ত্রকে মুক্ত করার স্লোগান। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে বলব, এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা আপনার নেত্রীকে মারার হুমকি দেব কেন? এই অভ্যাস আমাদের নেই, আপনাদের আছে।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর বলেন, আপনারা স্লোগান দিচ্ছেন জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো। এই আগুন আপনাদের জ্বালানোর দরকার নেই। শেখ হাসিনা নিজেই জ্বালিয়েছে। কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আগুণ জ্বলেনি? গার্মেন্ট শ্রমিকদের হুমকি দেওয়া হয়েছে, আন্দোলন করলে বেতন এক পয়সাও বাড়বে না। কী মজার জিনিস! গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়লে নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। তিন মাস আগে শ্রমিকরা যে বেতন পেতেন তাতে তাদের চলত, কিন্তু এখন সংসার চলে না। জিনিসপত্রে দাম ৩০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই শ্রমিকরা যদি টিকে থাকতে না পারে তাহলে গার্র্মেন্ট টিকবে না। রেমিটেন্সও বন্ধ হবে।
বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর ক্ষমতাসীনদের নির্যাতন প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর বলেন, সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে আহতদের দেখতে গেলে ছাত্রলীগ জোনায়েদ সাকির ওপর হামলা চালিয়ে গতকাল চট্টগ্রামে তাকে আহত করেছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।