সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েরগড় সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে কয়লার বস্তা আনার সময় যাদুকাটা নদীতে ডুবে সাব্বির মিয়া(২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে রোববার রাত সাড়ে ৮ টার সময় তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েরগড় সীমান্তের সীমান্ত পিলার ১২০৩ এর থ্রি এস এলাকার বারেকটিলা সংলগ্ন যাদুকাটা নদীতে। নিহত সাব্বির উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বড়গুফ টিলা গ্রামের আসাদ মিয়ার ছেলে।
নিহত সাব্বিরের পিতা আসাদ মিয়া জানান, প্রতিদিনের মতো রোববার সকালে সাব্বির সহ ৪/৫ জন মিলে যাদুকাটা নদীর সীমান্তের ওপাড়ে ভারতের ঘোমাঘাট এলাকায় যায় কয়লা আনতে । পরে সারাদিন কয়লা সংগ্রহ শেষে ৪ বস্তা কয়লা রাত সাড়ে ৮ টার দিকে প্লাস্টিকের টাংকিতে বেঁধে পানিতে ভাসিয়ে যাদুকাটা সাঁতিয়ে বাংলাদেশ আসার সময় বিজিবির টহলকারী নৌকার পেরিয়ে বারেকটিলা খেয়া ঘাটের কাছে আসার পর সাব্বির হঠাৎ কয়লার বস্তা বেঁধে রাখা টাংকি থেকে পানিতে পড়ে ডুবে যায়। এ সময় খেয়াঘাটে থাকা লোকজন দেখতে পেয়ে নদীতে প্রায় ঘন্টাখানেক খোঁজাখোঁজির পর তার লাশ উদ্ধার করে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, লাউড়েরগড় সীমান্ত ফাঁড়ির ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার খাদেমুল ইসলামের যোগসাজশে নদীতে টহলকারী বিজিবি সদস্যদের প্রতি কয়লার বস্তার জন্য ১০০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে প্রতিদিনই প্রায় শতাধিক লোক যাদুকাটা নদী দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতের ঘোমাঘাট এলাকায় যায় কয়লা আনতে । এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার সকালে সাব্বির সহ শতাধিক বাংলাদেশী অবৈধভাবে ভারতের ভিতরে গিয়ে কয়লা আনতে যায়। পরে রাতে কয়লার বস্তা টাংকি ও গাড়ির টিউবের সাথে বেধে যাদুকাটা নদী দিয়ে ভাসিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসার সময় নদীর পানিতে ডুবে সাব্বিরের মৃত্যু হয়।
শুধু যাদুকাটা নদী দিয়েই নয়! শাহ আরেফিন( রঃ) মাজার এলাকার কাঠাল বাগান এলাকা দিয়েও প্রতিদিন শতাধিক কয়লা শ্রমিক ভারতের ভিতরে যায় কয়লা আনতে। পরে ওইসব কয়লার বস্তা সীমান্তের কাছাকাছি করব স্থান এলাকায় এনে মজুদ রাখে মোটরসাইকেল যোগে লাউড়েরগড় বিজিবি ক্যাম্পের সামনের রাস্তা দিয়েই প্রকাশ্যেই দিনেভ্ব রাতে লাউড়েরগড় বাজারের দক্ষিণে নদীর পাড়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ডিপুতে রাখা হয়।
এ ব্যাপারে লাউড়েরগড় সীমান্ত ফাঁড়ির ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার খাদেমুল ইসলাম বলেন, ভাই আমি ভারতে লোক দেয়ার লোকনা। আমি কোন টাকা খাইনা। বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে ছেলেটা বারেকটিলার উপর দিয়ে কাটা তারের ভেড়ার পাশ দিয়ে কয়লা আনতে ভারতে গেছে। পরে বিজিবি যাতে না দেখে প্লাস্টিকের বড় টাংকিতে বেঁধে মাঝ নদী দিয়ে নিয়ে আসার সময় প্রবল স্রোতে পরে নদীর মাঝে ভেসে আসা বড় গাছের সাথে বারি( ধাক্কা) খেয়ে ডুবে যায়। পরে তার আত্নীয় স্বজন খবর পেয়ে আসে তার লাশ উদ্ধার করে।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে তাহিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনার স্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে সুনামগঞ্জ মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।