রফিক তালুকদার, আনোয়ারা:

কমিটির শীর্ষ দু’টি পদে নতুন কেউ আসছেন, নাকি পুর্বের দু’জনই বহাল থাকছেন?  এই নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা আর আলোচনা সমালোচনায় মুখর এখন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গন। আগামী ২৯জুলাই অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন।

সম্মেলন উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যেই গঠিত হয়েছে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি। যাতে আহ্বায়ক করা হয়েছে বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি  এস,এম,আলমগীর চৌধুরীকে। কোন যুগ্ন আহবায়ক কিংবা সদস্য সচিব বিহীন এ কমিটির বাকী চারজনই হলেন সদস্য, তাঁরা হলেন জাফর উদ্দিন চৌধুরী, মৃণাল কান্তি ধর, জানে আলম এবং ফজলুল করিম চৌধুরীর বাবুল।

সম্মেল প্রস্তুতির মূল কমিটির আকার ছোট হলেও ব্যাপক পরিসরে গঠন করা হয়েছে আরও পাঁচটি উপ-কমিটি, যাতে ঠাঁই পেয়েছেন বর্তমান উপজেলা কমিটির বেশ ক’জন পদবীধারী নেতা ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নের সভাপতি, সম্পাদক এবং উপজেলা পর্য্যায়ের অঙ্গসংগঠনের নেতাসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।

প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি:
১১ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটির আহবায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন, আর সদস্য সচিব করা হয়েছে এম,এ,কাইয়ুম শাহ্কে।

আইন শৃঙ্খলা উপ-কমিটি:
১৪ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটির আহবায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন বাবু সুগ্রীব মজুমদার দোলন, আর সদস্য সচিব করা হয়েছে মাস্টার মোহাম্মদ ইদ্রিচকে।

মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ-কমিটি:
১৮ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটিতে আহবায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী চৌধুরী, আর সদস্য সচিব করা হয়েছে বাবু অসীম কুমার দেবকে।

স্বাংস্কৃতিক উপ-কমিটি:
১৭ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটিতে আহবায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন মোহাম্মদ নোয়াব আলী, আর সদস্য সচিব করা হয়েছে মুহাম্মদ ইয়াছিন হিরুকে।

আপ্যায়ন উপ-কমিটি:
১৬ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটিতে আহবায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন জসিম উদ্দিন চৌধুরী, আর সদস্য সচিব করা হয়েছে মোহাম্মদ ছৈয়দকে।

তবে এসব উপ-কমিটিতে স্থান পাওয়া একাধিক সদস্যকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ তৃণমূলে সমালোচনারও কমতি নেই। বিগত ইউপি নির্বাচনে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া কয়েকজনকে কমিটিতে রাখার অভিযোগ তোলেন অনেকেই।
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক এসএম আলমগীর চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ একটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দল, এ দলে নানা বিষয়ে তর্ক বিতর্ক থাকাটাই স্বাভাবিক।

নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে আলমগীর চৌধুরী বলেন, দলীয় গঠনতন্ত্র মেনেই আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামীলীগের আগামী কমিটি গঠন  করা হবে, কমিটির শীর্ষ দুটি পদ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে জীবন বৃত্তান্তসহ আবেদন জমা নেওয়া হবে, পরবর্তিতে তা যাচাই-বাছাই করে কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতেই কমিটি করা হবে।

সম্মেল প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ও বর্তমান কমিটির ১ম যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ফজলুল করিম চৌধুরী বাবুল বলেন, এবারের সম্মেলনকে আমরা জাঁকজমকপূর্ণ একটি সম্মেলন হিসেবে করতে চাই, এ লক্ষ্যে পাঁচটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। সকলের সমন্বয় ও সহযোগিতায় সুশৃঙ্খল ভাবে একটি সফল সম্মেল অনুষ্টানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এ দিকে আগামী কমিটির শীর্ষ দুটি পদে কে আসছেন? এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে চলচে নানা হিসেব নিকেশ ও জল্পনা কল্পনা।

গুঞ্জনে রয়েছে, নতুন কমিটির সভাপতি পদটির জন্য বর্তমান দৌড় ঝাঁপে রয়েছেন বর্তমান কমিটির সভাপতি অধ্যাপক এম,এ,মান্নান চৌধুরী ছাড়াও সিনিয় সহ-সভাপতি এসএম আলমগীর চৌধুরী এবং সহ-সভাপতি জাফর উদ্দিন চৌধুরী। এর মধ্যে প্রথম দু’জনের নামই বেশী স্থান পাচ্ছে তৃণমূলের আলোচনায়।

সাধারণ সম্পাদক পদটির জন্য বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক ছাড়াও ১ম যুগ্ম সম্পাদক ফজলুল করিম চৌধুরী বাবুল, মোহাম্মদ ইয়াছিন হিরু,এবং জসিম উদ্দিন চৌধুরীর নাম শোনা যাচ্ছে সর্বত্রই।

তবে শেষ মুহুর্তে ভূমি মন্ত্রী ও আনোয়ারা-কর্ণফুলী আসনের সাংসদ সাইফুজ্জামান চৌধুরীর(জাবেদ) একান্ত আশীর্বাদের উপরই নির্ভর করবে এ দুটি পদে কারা আসবেন, এমনটাই মনে করেন স্থানীয় রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহল।