মো: আজমাইন মাহতাব:
গার্মেন্টস পণ্যের আড়ালে অভিনব কায়দায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে প্রায় ৩৭ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৩৭ হাজার বোতল বিদেশি মদ ও কোটি টাকা মূল্যের দেশি ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে। এ সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা আব্দুল আহাদকে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

র‌্যাব-১১ গোয়েন্দাসূত্রে জানতে পারে, মালবাহী কন্টেইনারে করে কতিপয় চোরাকারবারী চোরাচালানের মাধ্যমে শুল্ক-কর ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে মাদকদ্রব্য পরিবহন করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার দিকে রওনা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জের একটি আভিযানিক দল গত ২৩ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ে ঢাকাগামী মহাসড়কের উপর চেকপোস্ট স্থাপন করে ঢাকাগামী বিভিন্ন মালবাহী ট্রাক ও কন্টেইনারে তল্লাশী শুরু করে। এক পর্যায়ে সন্দেহজনক দুইটি কন্টেইনার তল্লাশী চালিয়ে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৩৬৮১৬ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মাদকের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মোট ৩১,৫৮,৮০,০০০.০০ টাকা ভ্যাটসহ সর্বমোট মূল্য ৩৬,৮৮,৮০,০০০.০০ টাকা।

অবৈধ চালান আমদানী কারবারের সাথে জড়িত ব্যক্তির ঢাকার ওয়ারীস্থ বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নগদ দেশী এবং বিদেশী মুদ্রা জব্দ করা হয়, যার পরিমাণ বাংলাদেশী টাকা ৯৮,১৯,৫০০, নেপালী রুপি ১৫,৯৩৫, ইন্ডিয়ান রুপি ২০,১৪৫, চায়না ইওয়ান ১১,৪৪৩, ইউরো ৪,২৫৫, থাই বার্থ ৭,৪৪০, সিংগাপুর ডলার ৯ এবং মালয়েশিয়ান রিংগিত ১৫। এসময় গ্রেফতার হয় মোঃ নাজমুল মোল্লা (২৩) ও মোঃ সাইফুল ইসলাম @ সাইফুলকে (৩৪)। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার সকালে রাজধানীর বিমান বন্দর এলাকা থেকে এ চক্রের অন্যতম হোতা আব্দুল আহাদকে (২২), গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, এই মাদক সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা গ্রেফতারকৃত আহাদ (২২) এবং মিজানুর রহমান আশিক (২৪) সম্পর্কে সহোদর এবং এই সিন্ডিকেটের মূলহোতা উভয়ের পিতাঃ মোঃ আজিজুল ইসলাম। তারা একবছর যাবত এই অবৈধ কারবারের সাথে জড়িত। তারা সি এন্ড এফ এর যোগসাজশের মাধ্যমে এই অবৈধ মাদক আমদানি কার্যক্রম করে থাকে। এই অবৈধ মাদক আমদানির ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন কোম্পানির কাগজপত্র ব্যবহার করে থাকে। এই চক্রটি দেশে টিভি ও গাড়ির পার্টস ব্যবসার আড়ালে অবৈধ মাদকদ্রব্য বিপনন নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। অবৈধ মাদক বিদেশ থেকে আনার পরে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর, রাজধানীর বংশাল ও ওয়ারীতে ওয়্যার হাউসে রাখা হয়। পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে এই সকল অবৈধ মাদক বিপনন করে থাকে। ক্ষেত্র বিশেষে পরিবহনকৃত ট্রাক/কন্টেইনার হতে সরাসরি ক্রেতাদের নিকট সরবরাহ করে থাকে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।