নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকায় ডলারের বাজারে নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। হু হু করে বাড়ছিল ডলারের দাম। ধাপে ধাপে টাকার মান কমানোয় খোলাবাজারে ডলারের দাম রেকর্ড ১২০ টাকা ছাড়ায় । পরিস্থিতি সামাল দিতে নানামুখী উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তৎপর হয় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব উদ্যোগে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। খোলাবাজারে দাম কিছুটা কমে এসেছে।
জানা গেছে, ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোতে অভিযান পরিচালনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এমনকি আকাশপথেও কেউ যেন বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করতে না পারে সেজন্য নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিমানবন্দরে যাত্রীদের লাগেজ তল্লাশি করা হচ্ছে বাড়তি সর্তকতা নিয়ে।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশে ডলার নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে, সেই সুযোগে কেউ যেন পাচার করতে না পারে সে বিষয়ে অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি লাগেজ তল্লাশি করা হচ্ছে কঠোরভাবে। বিমানবন্দরের মানি একচেঞ্জ বুথগুলোতেও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে, হঠাৎ করে ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ চিহ্নিত করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। পাশাপাশি সামনে এমন পরিস্থিতি এড়াতে বেশকিছু সুপারিশও করা হয়েছে।
সংস্থাটির সুপারিশে বলা হয়েছে- ডলার পাচার রোধে বিমানবন্দরে তল্লাশি কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। ভিআইপি যাত্রীদের তল্লাশি যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে হবে। ব্যাংক এবং মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার এনডোর্সের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি শর্ত আরোপ করা এবং নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে। ওভার এবং আন্ডার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমে যেন ডলার পাচার না হয় সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
প্রসঙ্গত, দেশে ডলারের বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই জুন মাস থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বিমানবন্দরে একাধিক যাত্রী অবৈধভাবে বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের সময় আটক হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ডলার পাচার রোধে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
সম্প্রতি ৪২টি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানকে ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ’ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ৩টি মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত হয়েছে। পাঁচটি দেশি ও একটি বহুজাতিক ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউসে ১০৮ থেকে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার কেনাবেচা হয়। খুচরা পর্যায়ে ১১০ থেকে ১১১ টাকা ৫০ পয়সার মধ্যে কেনাবেচা হচ্ছে ডলার। দেশের তফলিসি ব্যাংকে বেচাকেনা চলছে ৯৫ থেকে ৯৬ টাকার মধ্যে। অন্যদিকে আন্তঃব্যাংকে ৯৫ টাকায় ডলার বিক্রি হচ্ছে। আন্তঃব্যাংক থেকে এ দামে অন্য ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কিনে থাকে।