মোছা. জান্নাতী বেগম(নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি) : জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব নজরুল স্টাডিজের ২০২০-২১ অর্থ বছরের গবেষণা প্রকল্পের অগ্রগতি সেমিনার সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। সেমিনারে ১৫ জন গবেষক তাদের গবেষণা অগ্রগতির প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর ও প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান।
১৫ গবেষকের গবেষণার বিষয় ছিল- মো. কাহারুল ইসলাম- ‘নজরুলের চেতনায় মানবতাবাদ: একটি দার্শনিক বিশ্লেষণ’, মো. হুমায়ুন কবির-‘সাংবাদিক নজরুলের দৃষ্টিতে ঔপনিবেশিক ভারত’, ধর্ম নারায়ন রায়- ‘কবি নজরুলের ম্যুরাল ও ভাস্কর্য : বিষয়বৈচিত্র্য ও নান্দনিকতা’, মো: আশরাফ উল্লাহ- ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নজরুল জয়ন্তী: শিল্পকর্ম প্রদর্শনী, শিল্পী ও শিল্পবোদ্ধাদের মতামত’, জবা রায়- ‘নিসর্গনারীবাদের প্রেক্ষিতে নজরুলের কবিতায় নারীর চিত্রায়ন’, কনক কান্ত চৌধুরী- ‘নজরুলের লেটোগান : বিষয় ও আঙ্গিক সমীক্ষণ’, মো. এনামুল করিম- ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুলের নাটক প্রযোজনায় কার্যকর নির্দেশনাশৈলী অনুসন্ধান’, সেজুতি ধর- ‘নজরুলের গল্পে লোকভাষা: সমাজ ভাষাবিজ্ঞানের আলোকে’, বায়েজিদ হাসান-‘তৎকালীন বাঙালির বাস্তব জীবন ও নাগরিক পরিমন্ডলে ‘মৃত্যুক্ষুধা’, তৌহিদুর রহমান তুহিন- ‘সেতু-বন্ধন নাটকে কাজী নজরুল ইসলামের পরিবেশ ভাবনা’, কোহিনূর রহমান- ‘নজরুলের ইসলামি গান : প্রসঙ্গ না’ত-এ রসুল’, নাজমা খাতুন- ‘কাজী নজরুল ইসলামের নাট্য-জগৎ : বিষয় ও শিল্প স্বাতন্ত্র্য’, জাকিয়া সুলতানা- ‘কাজী নজরুল ইসলামের চিঠি ও অভিভাষণ : বিষয় ও ভাষাশৈলী’, প্রতীতি সরকার প্রীতি ও মো. সাজ্জাদ হোসেন-নজরুল রচিত শিশুতোষ নাটক: বিষয়বৈচিত্র্য ও চরিত্রায়ণ।
সেমিনারে গবেষকদের প্রবন্ধ উপস্থাপন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমাদের গবেষকরা তাদের কার্যক্রম ঠিকঠাকমতোই করে চলেছে। তাদের গবেষণার বিষয়গুলো অত্যন্ত ভালো ও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এরিয়াটা ছোট করা দরকার। এত বড় এরিয়ার কোন দরকার নেই। ভূমিকা, পরিপ্রেক্ষিত এত দিয়ে এটাকে একেবার কঠিন করার কোন দরকার নেই। বরং মান যেন ভালো হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পরিমাণের যেন খোঁজ না করি।
তিনি আরও বলেন, গবেষকরা তাদের গবেষণা কাজ শেষ করার পর একটা করে সফ্ট কপিও জমা দিবে। যা আমরা আমাদের ডেভেলপকৃত ওয়েবসাইটে দিয়ে দিব, যাতে সারা পৃথিবীর মানুষ এটা দেখতে পারে। তাতে আমাদের নিজস্বতা যেমন থাকবে তেমনি চর্বিত চর্বণ করা, কারো কাছ থেকে হুবহু নিয়ে করা সেই ভয়টা কমে যাবে। কারণ যদি কেউ এ ধরনের কাজ করে ধরা পড়ে তাহলে সেটা কিন্তু শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে।
তরুণ গবেষকদের উদ্দেশে প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সততা। সবাইকেই যে গবেষক হতে হবে তা কিন্তু না । গবেষণার ক্ষেত্রে আমি যদি বিন্দুমাত্র অবদান রাখতে পারি, নতুন কিছু দিতে পারি সেটিই গবেষণা। আমরা গবেষণার দিকে দৃষ্টি দিয়েছি। শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়ন এ তিনটি লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ছাত্রছাত্রীদের যে গবেষণা স্পৃহা এটা যদি আমরা প্রণোদণা দিতে পারি তাহলেই তারা বড় গবেষক হতে পারবে। আর শিক্ষকরা যেন গবেষকদের মেথডলজিটা শেখান আমি সেটার কথা বলবো। গবেষণাকে কী করে পদ্ধতিবিদ্যা অনুসারে করবো সেটা গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণাকে এটি শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে এ ধরনের অগ্রগতি সেমিনার কেমন হওয়া উচিত তার একটি ডায়াগ্রাম আমার ঠিক করে দেব। নিয়মিত সেমিনার, সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করা হবে।
সেমিনারে গবেষণা তত্ত্বাবধায়কদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মার্জিয়া আক্তার, সহযোগী অধ্যাপক ড. সৈয়দ মামুন রেজা, ড. এমদাদুর রাশেদ সুখন, ড. তপন কুমার সরকার, মাসুম হাওলাদার, ড. মো. কামালউদ্দিন, ড. মেহেদী উল্লাহসহ অন্যরা।