বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই অঘটনের জন্ম দিলো নামিবিয়া
16, October, 2022, 2:04:9:PM
ক্রীড়া ডেস্ক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই বড় অঘটনের জন্ম দিয়েছে নামিবিয়া। সদ্য এশিয়া কাপ জেতা শ্রীলঙ্কাকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে আফ্রিকান দলটি। অস্ট্রেলিয়ার গিলংয়ের কার্দিনিয়া পার্কে ৫৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে লঙ্কনরা।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৩ রান সংগ্রহ করেছিল নামিবিয়া। জবাব দিতে নেমে শ্রীলঙ্কা ১৯ ওভারে অলআউট হয়ে যায় ১০৮ রানে। কিন্তু ফিল্ডিংয়ে নেমে অবশ্য শুরুটা দারুণই করেছিল লঙ্কানরা। পাওয়ারপ্লেতেই তুলে নিয়েছিল নামিবিয়ার তিন উইকেট। শুরুর ছয় ওভারে কেবল ৩৫ রানই জড়ো করতে পারে নামিবিয়া।
এরপরই লড়াইয়ে ফেরে গতবার সুপার টুয়েলভ খেলা আফ্রিকান দলটির। স্টেফান বার্ড আর অধিনায়ক গেরহার্ড ইরাসমাসের ৪১ বলে ৪৩ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় নামিবিয়া। তবে ইরাসমাসকে হারানোর কিছু পর বার্ড আর ডেভিড ভিসার উইকেট খুইয়ে আবারও খাদের কিনারে চলে গিয়েছিল তারা।
এরপরের গল্পটা কেবলই ইয়ান ফ্রাইলিঙ্ক আর ইয়োহাম্ন স্মিথের। দুজন মিলে সপ্তম উইকেট জুটিতে ৩৩ বলে যোগ করেন ৬৯ রান, যা সপ্তম বা তার নিচের উইকেট জুটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তৃতীয় সর্বোচ্চ।
তাতে ভর করেই শ্রীলঙ্কাকে তাদের বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম বিস্মরণযোগ্য ডেথ বোলিং অভিজ্ঞতার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় নামিবিয়া। শেষ চার ওভারে নামিবিয়ানরা তোলে ৫৭ রান, লঙ্কানদের বিশ্বকাপ ইতিহাসে শেষ চার ওভারে এর চেয়ে বেশি রান হজমের নজির আছে আর মাত্র একটি, ২০১০ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে শেষ চার ওভারে ৬২ রান হজম করেছিল দলটি।
১৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই শ্রীলঙ্কা পুরোপুরি ব্যাকফুটে চলে যায়। নামিবিয়ান বোলিংয়ের সামনে বলতে গেলে দিশেহারা অবস্থা হয় লঙ্কান ব্যাটারদের। টসের সময়েই নামিবিয়ার অধিনায়ক গেরহার্ড এরাসমাস বলেছিলেন, ‘এই কন্ডিশনে ভালো করার মত বোলার আমাদের হাতে রয়েছে।’
তারই প্রতিধ্বনি যেন বোলিংয়ে এসে দিয়ে যাচ্ছিল নামিবিয়ান বোলাররা। শুরুতে ২১ রানে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে লঙ্কানদের পুরোপুরি চেপে ধরে নামিবিয়া। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে লঙ্কানরা। সে সঙ্গে রানের চাকা সচল করতে না পারায় বাড়তে থাকে চাপ। যা শেষ পর্যন্ত পরাজয়ের দিকে নিয়ে যায় তাদের।
অভিজ্ঞ ডেভিড ওয়াইজই পার্থক্যটা গড়ে দেন। শুরুতেই ব্রেক থ্রু আনেন তিনি। কুশল মেন্ডিসকে জেন গ্রিনের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। ৬ বলে ৬ রান করে ফিরে যান মেন্ডিস। এরপর পরপর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন তরুণ পেসার বেন শিকোঙ্গো।
প্রথমে পাথুম নিশাঙ্কাকে জেজে স্মিটের হাতে ক্যাচ দেয়ান শিকোঙ্গো। ১০ বলে ৯ রান করে আউট হন তিনি। দানুসকা গুনাথিলাকা ব্যাটের কানায় লাগিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। যদিও পরের বলে আর হ্যাটট্রিকটা করতে পারেননি শিকোঙ্গো।
ধনঞ্জয়া ডি সিলভা চেষ্টা করেন ঘুরে দাঁড়ানোর। কিন্তু ১২ রান করার পর তাকেও সাজঘরের পথ দেখিয়ে দেন ইয়ান ফ্রাইলিংক। শিকোঙ্গোর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। ভানুকা রাজাপাকসে এবং অধিনায়ক দাসুন শানাকা মিলে চেষ্টা করেন পঞ্চম উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর।
কিন্তু তাদের ৩৪ রানের জুটিটাকে আর বাড়তে দেননি স্কলটজ। রাজাপকসেকে লা কুকের হাতে ক্যাচে পরিণত করে এই জুটি ভাঙ্গেন তিনি। ২১ বলে ২০ রান করে ফেরেন রাজাপাকসে। সঙ্গী হারিয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি দাসুন শানাকা। ২৩ বলে তিনি করেন ২৯ রান। ২টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কার মার মারেন তিনি।
পরের ব্যাটাররা আর দাঁড়াতেই পারেননি। হাসারাঙ্গা ৪, চামিকা করুনারত্নে ৫, প্রমোদ মধুশান শূন্য, দুষ্মন্তে চামিরা আউট হন ৮ রান করে। ১১ রানে অপরাজিত থাকেন ১১ নম্বর ব্যাটার মহেশ থিকসানা। নামিবিয়ার বোলারদের মধ্যে ২টি করে উইকেট নেন ডেভিড ওয়াইজ, ব্রেন্ডন স্কলটজ, বেন শিকোঙ্গো, ইয়ান ফ্রাইলিংক, জেজে স্মিট।