নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এ পরীক্ষা ঘিরে প্রশ্নফাঁসের গুজব এড়াতে এবং নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরীক্ষা আয়োজনে আগামী ৩ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ নির্দেশনা দেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার সারাদেশে ৯টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবে। দেশের ২ হাজার ৬৪৯টি পরীক্ষাকেন্দ্রে ৯ হাজার ১৮১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষায় অংশ নেবে।
এবারের পরীক্ষায় গত বছরের চেয়ে প্রায় দুই লাখ পরীক্ষার্থী কমেছে। গত বছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার মোট ১১টি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ৬ লাখ ২২ হাজার ৭৯৬ জন এবং ছাত্রী সংখ্যা ৫ লাখ ৮০ হাজার ৬১১ জন। মোট কেন্দ্র সংখ্যা ২ হাজার ৬৪৯টি, মোট প্রতিষ্ঠান ৯ হাজার ১৮১টি। গত বছরের তুলনায় কেন্দ্র বেড়েছে ২৮টি, প্রতিষ্ঠান কমেছে ২টি। বিদেশের ৮টি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২২২ জন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা উপলক্ষে আগামী ৩ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজবমুক্ত ও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা সুষ্ঠু, সুন্দরভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। এছাড়া ১ জানুয়ারি বই বিতরণ করা সম্ভব হবে বলে এসময় আশা প্রকাশ করেন তিনি।
চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক বা এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আগামী ৬ নভেম্বর শুরু হয়ে শেষ হবে ১৩ ডিসেম্বর। ১৫ ডিসেম্বর ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হবে ২২ ডিসেম্বর। অর্থাৎ ৩৭ দিনেই শেষ হবে এইচএসসির লিখিত পরীক্ষা।
পুনর্বিন্যাস করা পাঠ্যসূচি অনুযায়ী চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এইচএসসিতে এবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষা না নিয়ে তা সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে নম্বর দেওয়া হবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. আবুল বাশারের সই করা সূচিতে জানানো হয়েছে, সব পরীক্ষা হবে ২ ঘণ্টার। এর মধ্যে বহুনির্বাচনী প্রশ্নের জন্য ২০ মিনিট এবং রচনামূলক প্রশ্নের জন্য ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট সময় পাবে পরীক্ষার্থীরা। প্রথমে বহুনির্বাচনী এবং পরে রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, মাঝে কোনো বিরতি থাকবে না। পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের আসন গ্রহণ করতে হবে।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি এবং এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও গত বছর করোনা মহামারির কারণে তা সম্ভব হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। এ অবস্থায় গত বছর প্রায় ৯ মাস পিছিয়ে নভেম্বরের মাঝামাঝি এসএসসি আর ডিসেম্বরের শুরুতে নেওয়া হয় এইচএসসি পরীক্ষা। তবে এ বছর করোনার পাশাপাশি বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে যায়।