সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার উপজেলার বিএডিসি মাঠে আওয়ামী লীগের সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলন মঞ্চে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন এবং জেলার সভাপতি-সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলন শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই বিতর্কে জড়ান দুই পক্ষের সমর্থকরা। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন তারা। এমনকি মঞ্চে উপস্থিত নেতাদের লক্ষ্য করেও ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। এসময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা মাথায় প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে রক্ষা পেলেও এ সংঘর্ষে অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
দিরাই পৌরসভার মেয়র বিশ্বজিত রায়, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক কামরুল হাসান চৌধুরী, জেলা যুবলীগ নেতা আসাদুজ্জামান সেন্টু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডের সভাপতি কুবাদ আলী, দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়া, পৌর কাউন্সিলর এবিএম মাসুম প্রদীপ, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ দিরাই উপজেলার সভাপতি রিজওয়ান ইসলাম, দিরাই যুবলীগ নেতা আলী আসগর, টুনু মিয়া, জুসেফ মিয়া সহ আরো অনেকে আহত হন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন বলেছেন, যারা এই বিশৃঙ্খলা করেছে তারা আওয়ামী লীগের কেউ নয়। বিএনপির এজেন্টরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, যারা সম্মেলনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সিনিয়র সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ মতিউর রহমান বলেন সাবেক মেয়র মোশারফ মিয়াকে পূর্বেই দিরাই উপজেলা আওয়াম ীলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কাজেই এই সম্মেলনকে বানচাল করাই ছিল তার একটা মুখ্য উদ্দেশ্য।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের জন্য সকাল ১০টা থেকে দিরাই বিএডিসি মাঠে জড়ো হতে থাকেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায় গ্রুপের নেতাকর্মীরা। দুপুর ১টার দিকে কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে পৌঁছানোর পরপরই সাবেক পৌর মেয়র ও সভাপতি প্রার্থী মোশাররফ মিয়া বিপুল সমর্থক নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন।
এ সময় দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে অনন্ত ২০ জন আহত হন। দুই গ্রুপ বেপরোয়া ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকলে সমাবেশস্থল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
মঞ্চে থাকা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন, সুনামগঞ্জ-২ সংসদ সদস্য ডঃ জয়া সেনগুপ্তা,সুনামগঞ্জ -৫ সংসদ সদস্য মহিবুবর রহমান মানিক, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য শামিমা আক্তার সহ নেতারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নেতাকর্মীদের বেষ্টনীতে কিছু সময়ের জন্য মঞ্চ ত্যাগ করেন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সংঘর্ষকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ফের সম্মেলন শুরু হয়।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃসাইফুল আলম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা। হাসপাতাল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়ন করা হয়েছে।