কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি তাঁদের কাজ প্রায় শেষ করেছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) প্রতিবেদন জমা দিবে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বন্ধের দিনেও তদন্তের নানান দিক খতিয়ে দেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি। দিনব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডলের কক্ষে দ্বিতীয় দিনের মতো তদন্ত কমিটির সদস্যরা পর্যালোচনায় বসেন।
পর্যালোচনায় উপস্থিত ছিলেন প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুর্শিদ আলম ও সদস্য সচিব একাডেমিক শাখার উপ-রেজিস্ট্রার আলীবদ্দীন খান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব একাডেমিক শাখার উপ-রেজিস্ট্রার আলীবদ্দীন খান বলেন, আমাদের পর্যালোচনা কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামীকালও আমরা বসে আরেকটু কাজ করবো। তার পরে প্রতিবেদন জমা দিয়ে দিবো। সিসিটিভি ফুটেজ এখনও পাইনি। তবে চেষ্টা করছি পাওয়ার। এদিকে শেখ হাসিনা হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় তদন্তের সহায়ক সিসিটিভি ফুটেজ সাতদিনেও উদ্ধার করতে পারেনি হল প্রশাসন।
সূত্র জানায়, ফুটেজ না পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। মনিটর সচল থাকলেও বায়োসের ব্যাটারি নষ্ট হওয়ায় ফুটেজ আছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। গত শনিবার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করতে গেলে এটি তদন্ত কমিটির সদস্যদের নজরে আসে। জানা যায়, হলের বাইরে এবং ভেতরে মিলিয়ে মোট ৮টি সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। এরমাঝে দুইটা অচল। ক্যামেরাগুলো যে অবস্থানে লাগানো রয়েছে তাতে অই রাতের ঘটনার একটা অংশ ভিডিও ধরা পড়ার কথা এসব ক্যামেরায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক ড. আহসানুল আম্বিয়া বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। তবে আমার ধারণা ফুটেজ উদ্ধার করা সম্ভাবনা ক্ষীণ। এখন রিকভকারি এক্সপার্টরা যদি পারে তাহলে ভালো কথা। এ বিষয়ে দেশরতœ শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট ড. শামসুল আলম বলেন, টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে আমরা এখনো ফুটেজ পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সেন্টারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দুই তিনদিনের ভিতরে রেজাল্ট পাওয়া যাবে। প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা হলে গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে রাতভর বিভিন্ন কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগ সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও ফিন্যান্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাসসুমসহ আরও ৭-৮ জন জড়িত বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও উচ্চ আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের গঠন করা মোট তিনটি কমিটি তদন্তের কাজ করছেন।