সাভারে দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহকালে সাংবাদিকের ক্যামেরা ভাঙচুর
31, March, 2023, 6:53:16:PM
মোহাম্মদ ইয়াসিন :
ঢাকার সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন কেন্দ্রে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার তথ্য সংগ্রহকালে বেসরকারি টেলিভিশন `এখন টিভি` ও দৈনিক কালবেলার সাভার প্রতিনিধির উপর হামলা এবং ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সাভার মডেল থানায় ভুক্তভোগীর ক্যামেরাপার্সন নয়ন ইসলাম (২২) উপস্থিত হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনাস্থল আশুলিয়া থানা এলাকায় হওয়ায় তা পুনরায় আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে অভিযোগটি হস্তান্তর করা হয়।
ঘটনার তদন্তে জানাযায়, ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বিপরীতে সাভার ডেইরি ফার্মের ভিতর ভুক্তভোগীগন দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহে গেলে। ক্যামেরা পারসন নয়নসহ `এখন টিভি`র সাংবাদিক হুমায়ুন কবিরকে ফার্মের ভিতর প্রায় দুই ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে।
ভুক্তভোগী নয়ন জয়পুরহাট জেলার সদরের নতুনহাট গ্রামের মৃত ফয়েজ ইসলামের ছেলে। তিনি সাভারের কলমা এলাকায় ভাড়া থেকে এখন টিভির সাভার প্রতিনিধি হুমায়ুন কবিরের ক্যামেরাপার্সন হিসাবে কাজ করতেন। হুমায়ুন কবির সাভারের কলমা এলাকার বাসিন্দা। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল `এখন টিভি`র ও দৈনিক কালবেলা পত্রিকার সাভার প্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- সাভার ডেইরি ফার্মের ডেইরী ফার্ম ওয়ার্কসম্যান ইউনিয়ন সভাপতি মোঃ আসাদুর রহমান (৪৮) ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাসুদ মুন্সি (৪২)। তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায় নি। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ৪০/৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, ডেইরী ফার্মে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিপুল পরিমান টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেন আসাদুর ও মাসুদ মুন্সি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করতে সাভার ডেইরি ফার্মে গেলে নয়নসহ সাংবাদিক মো: হুমায়ুন কবিরকে তারা তাদের লোকজন নিয়ে ঘিরে ফেলে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। পরে তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সংগ্রহ করতে এসেছে এমন চিৎকার করে হামলা করে অভিযুক্তরা। এসময় ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙ্গচুরের পর ক্যামেরাম্যান নয়নকে বেধড়ক মারধর করে। পরে ডেইরি ফার্মের প্রধান ফটক আটকে দিয়ে তাদের প্রায় দুই ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে অভিযুক্তরা। এসময় তারা খুন করে লাশ গুম করার হুমকি প্রদান করেন। খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
প্রতক্ষদর্শী সংবাদকর্মী গণকন্ঠ পত্রিকার সাভার উপজেলা প্রতিনিধি সিফাত মাহমুদ ফাহিম বলেন, ` সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আমরা ডেইরি ফার্মে যাই৷ প্রথমে আমাদের সাথে ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আসাদের সাথে দেখা হয়। তার সাথে কথা বলতে বলতে তিনি হঠাৎ উত্তেজিত হন। এর পরই সাধারণ সম্পাদক মাসুদ মুন্সি আসেন। তিনি আসার সাথে সাথেই তাদের একটি সাইরেন বাজান। এসম ডেইরি ফার্মের সকল কর্মচারী একত্রিত হলে ক্যামেরাম্যান নয়ন ভিডিও নিতে থাকেন। ভিডিও ফুটেজ নেওয়া দেখে তারা সদলবলে আক্রমণ চালিয়ে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুর করেন এবং নয়নকে মারধর করেন।
এব্যাপারে `এখন টিভি`র সাভার প্রতিনিধি হুমায়ুন কবির বলেন, `ওরা আমার ক্যামেরাম্যানের হাত থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুর করে। পরে নয়নকে বেধড়ক মারধর করে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এব্যাপারে দুই জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জনের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে তা আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।