৫ প্রকল্পে বাংলাদেশকে ২২৫ কোটি ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
2, May, 2023, 12:32:12:PM
স্বাধীন বাংলা রিপোর্ট : বাংলাদেশকে ২২৫ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। আঞ্চলিক বাণিজ্য ও যোগাযোগ, দুর্যোগ প্রস্তুতি ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনার পাঁচটি উন্নয়ন প্রকল্পে এ ঋণ দেওয়া হবে।
স্থানীয় সময় সোমবার বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থার মধ্যে এ–সংক্রান্ত একটি ঋণচুক্তি সই হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস চুক্তি সইয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন।
ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক এ অর্থায়ন চুক্তি সমূহে স্বাক্ষর করেন।
ঋণচুক্তির পাঁচটি প্রকল্প হলো: পূর্ব–দক্ষিণ এশিয়ায় পরিবহন ও বাণিজ্য সংযোগ ত্বরান্বিতকরণ (অ্যাকসেস)-বাংলাদেশ ফেজ-১ প্রকল্প, যার মূল্য ৭৫৩ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
স্থিতিস্থাপকতা, অভিযোজন ও দুর্বলতা হ্রাসের জন্য ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার বিল্ডিং প্রজেক্ট (রিভার), যা বাংলাদেশের ডেলটা প্ল্যান ২১০০–কে সমর্থন করার জন্য প্রথম বড় বিনিয়োগ হবে। এটি অভ্যন্তরীণ বন্যার বিরুদ্ধে দুর্যোগ প্রস্তুতি উন্নত করতে সহায়তা করবে।
৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফার্স্ট বাংলাদেশ গ্রিন অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ডেভেলপমেন্ট (জিসিআরডি), প্রকল্পটি এ ধরনের প্রথম ঋণ, যা দেশের স্থিতিস্থাপক উন্নয়নে রূপান্তরে সহায়তা করবে।
২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সাসটেইনেবল মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্ট ট্রান্সফরমেশন (স্মার্ট) প্রকল্পের লক্ষ্য ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা খাতকে আরও গতিশীল, কম দূষণকারী, সম্পদ দক্ষ এবং জলবায়ু সহনশীল প্রবৃদ্ধি খাতে রূপান্তর করতে সহায়তা করা।
২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (বেস্ট) প্রকল্পটি পরিবেশ ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে এবং সবুজ বিনিয়োগে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করবে।
ঋণের শর্তে বলা হয়েছে- পাঁচটি ঋণের মধ্যে চারটি ঋণের অর্থ সম্পূর্ণরূপে রেগুলার আইডিএ হিসেবে পাওয়া যাবে। তবে গ্রিন ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স ডেভেলপমেন্ট ক্রেডিট (জিসিআরডি) শীর্ষক প্রোগ্রামের আওতায় ৫০ কোটি ডলার ঋণের ১৭ দশমিক ৬ কোটি মার্কিন ডলার রেগুলার আইডিএ এবং বাকি ৩২ দশমিক ৮ কোটি মার্কিন ডলার শর্ট টার্ম ম্যাচিউরিটি লোন হিসেবে মিলবে।
রেগুলার আইডিএ ঋণের অর্থ ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ (ত্রিশ) বছরে পরিশোধ করতে হবে। এ ঋণের উত্তোলিত অর্থের ওপর বার্ষিক ০ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ এবং ১ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। এছাড়া আনউইথড্রন ফাইন্যান্সিং ব্যালেন্স বা অনুত্তোলিত অর্থের ওপর বার্ষিক সর্বোচ্চ ০ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে কমিটমেন্ট ফি দিতে হবে। চলতি অর্থবছরসহ দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের জন্য বিশ্ব ব্যাংক কমিটমেন্ট ফি মওকুফ করেছে।
অন্যদিকে শর্ট টার্ম ম্যাচিউরিটি লোনের অর্থ ৬ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১২ বছরে পরিশোধ করতে হবে। এ ঋণের উত্তোলিত অর্থের ওপর কোনো সার্ভিস চার্জ ও সুদ প্রযোজ্য হবে না।
প্রসঙ্গত, ১৯৭২ সাল থেকে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত ৩৬৮টি প্রকল্প ও কর্মসূচির অধীনে সর্বমোট ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ সহায়তা এবং ৭২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।