বাংলাদেশে প্রায় অর্ধশত ক্রীড়া ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে। তাদের মধ্যে হাতে গোনা ১০/১২ টি খেলা জনপ্রিয়। নতুন খেলা ডিউবল খুব অল্প সময়ের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে দর্শকদেরকাছে। একের ভিতর পাচঁ খেলার সংমিশ্রন। ফুটবল, হ্যান্ডবল, বাস্কেটবল, রাগবি এবং আরচারি (তীরধনুক) এই পাচঁটি খেলাতে দক্ষ খেলোয়াড়দের ভালো ফলাফল করা খুব সহজ ডিউবলে। অন্যদিকে দর্শকরাও এক খেলায় পান পাচঁ খেলা দেখার আনন্দ উত্তেজনা। তাই দিন দিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ডিইবল খেলাটি বাংলাদেশে। বর্তমানে বিশে^র প্রায় ৩০ টি দেশ ডিউবল খেলায় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করছে। আশিয়ানে ৮টি, ইউরোপে ২টি, মধ্যপ্রাশ্চে ৭টি, আফ্রিকায় ৫টি, ল্যাটিন আমেরিকার আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল সহ আরো কটি দেশে এবং সাফ অঞ্চলে বাংলাদেশ সহ ৭টি দেশ (ভুটান বাদে) এ খেলায় আন্তর্জাতিক টুর্ণামেন্টে অংশ নেয়। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ডিউবল অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হয়। গত পাচঁ বছরে ৫টি জাতীয় প্রতিযোগিতার সফল সমাপ্তিহয়েছে। ডিউবল খেলায় প্রতি দলে ১২ জন খেলোয়াড় থাকেন। তাদের মধ্যে সাত জন করে খেলোয়াড় খেলায় অংশ নেন।বিশে^র পাচঁ তারকা খেলোয়াড়রা ডিউবলে অংশ নিয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ ডিউবল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিএম সহিদুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে ২০১৯ সালে ডিউবল অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে করোনাকালিন সময়ও এর কার্যক্রম বন্ধ থাকেনি। দিন দিন ডিউবল খেলাটি নতুন প্রজন্মের কাছেও আগ্রহ ও জনপ্রিয়তা বেড়েছে। ইতোমধ্যেই ডিউবলের রেজিষ্ট্রেশনকৃত খেলোয়াড়ের সংখ্যা পুরুষ ২০০ ও নারী ১০০ জনে। দেশে এখন ডিউবল ক্লাবের সংখ্যা প্রায় ১৫ টি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বেশ আগ্রহ সহকারে ডিউবল টিম গঠনের আগ্রহ লেটার আসছে। আশা করি দেশের প্রতিটা জেলায় মাঠে গড়াবে উিউবল খেলা। বিএম সহিদুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই দুটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছে। ২০১৯ সালে ভারতের পাঞ্জাবে অনুষ্ঠিত পাচঁ জাতি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ গ্রুপ সেরা হলেও শিরোপা থেকে বঞ্চিত করে স্বাগতিকরা আমাদের। আগামী নভেম্বরে ভারতের মুম্বাইতে অনুষ্ঠিত হবে ১২ দেশের অংগ্রহনে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ানশীপ। ওই আসরে বাংলাদেশের টার্গেট শিরোপা জয়ের।বিএম সহিদুজ্জামান আরো বলেন, উিউবল খেলো দেশে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, খেলোয়াড়ের সংখ্যাও বাড়ছে। অল্প সময়ে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টেও ভালো ফলাফল করে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে বাংলাদেশ।অতএব সরকারের ক্রীড়া সংশ্লিষ্ঠ মহলের কাছে ডিউবল খেলার বিশেষ অনুদান, মাঠ, অ্যাসোসিয়েশনের স্থায়ী কক্ষ অনুমোদনের বিশেষ দাবী জানাই।
এদিকে, সম্প্রতি শহিদ ক্যাপ্টেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল স্মরণে অনুষ্ঠিত ওয়ালটন পঞ্চম জাতীয় ডিউবল প্রতিযোগিতায় (পুরুষ ও নারী)-২০২৩ উভয় বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। ১৪ দলের অংশগ্রহনে শহিদ শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত নারী বিভাগের ফাইনালে বাংলাদেশ আনসারকে ১১-৬ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় পুলিশ। আর পুরুষ বিভাগের ফাইনালে ৮-৬ গোলে বাংলাদেশ জেলকে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় পুলিশ দল। নারী বিভাগে পুলিশের হিমু ও পুরুষ বিভাগের বাংলাদেশ জেলের অপু টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। ফাইনাল শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ-পিএলসি’র জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক এফ.এম. ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন)। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (প্রশাসন) শেখ হামিম হাসান, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের উপ-মহাসচিব আশিকুর রহমান মিকু ও ডিএমপি’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ফোর্স) মো. শরিফুল আলম। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডিউবল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিএম সহিদুজ্জামান, যুগ্ম সম্পাদক ও টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আজম আলী খান, যুগ্ম সম্পাদক লায়ন শহিদুল্লাহ এবং কোষাধ্যক্ষ দীন ইসলাম।
এবারের এই প্রতিযোগিতার দুই বিভাগে মোট ১৪টি দল অংশ নেয়। তার মধ্যে পুরুষ বিভাগে ৮টি ও নারী বিভাগে ৬টি দল ছিল। পুরুষ বিভাগের দলগুলোর মধ্যে ছিল- বাংলাদেশ পুলিশ ডিউবল ক্লাব, বাংলাদেশ জেল, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি, খুলনা জেলা ক্রীড়া সংস্থা, সাউথ পয়েন্ট স্পোর্টস ক্লাব, জে.বি.আর.সি নারায়ণগঞ্জ, রাজধানী স্পোর্টিং ক্লাব ও ফিরোজ স্মৃতি সংসদ। আর নারী বিভাগের দলগুলোর মধ্যে ছিল- বাংলাদেশ পুলিশ ডিউবল ক্লাব, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি, জে.বি.আর.সি নারায়ণগঞ্জ, জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা, রাজধানী স্পোর্টিং ক্লাব ও ফিরোজ স্মৃতি সংসদ।