পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করতে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘ক্যাম্পাসে দখলদারিত্বের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল’ শীর্ষক সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে হাসিনাকে প্রধান আসামি করে এবং অন্যান্য যারা তার সহযোগী ছিল এবং ফ্যাসিজমের যারা সহযোগী ছিল তাদেরকে আসামি করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হবে।’
উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে হুশিয়ারী দিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা অনেক উপদেষ্টাদেরকে দেখেছি খুনীদেরকে পুনর্বাসন করার বক্তব্য দিতে।’
আমরা উপদেষ্টাদেরকে মনে করিয়ে দিতে চাই ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আপনি উপদেষ্টা হয়েছেন। সুতরাং যখন কোনো বক্তব্য দেবেন আপনার সামনে যেন ৫ আগস্টের গণভবনের চিত্রটা মাথায় থাকে। যারা স্বৈরাচারকে পুনর্বাসন করতে চায়, খুনি হাসিনাকে পুনর্বাসনের বক্তব্য দিতে চায়, আমরা ছাত্র জনতা যেভাবে তাদেরকে উপদেষ্টা বানিয়েছি, ঠিক একইভাবে গদি থেকে ছুড়ে নামাতে দ্বিধা করবো না।’
হাসনাত বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনকে সার্বজনীন করার জন্য গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য’।
স্বৈরাচারকে উৎখাত করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি কিছু কিছু গণমাধ্যম খুনীদের পুনর্বাসনের যড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে।’
আরেক সমন্বয়ক সার্জিস আলম বলেন, ‘আমরা দেখছি আমলাতন্ত্রের বিভিন্ন পর্যায়ে কিছু স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের হায়না এবং শকুনেরা ক্যু করার চিন্তা করছেন। আমরা জানিয়ে দিতে চাই বাংলাদেশের ছাত্র জনতা যখন এক হয়েছে তখন আপনাদের এসব ক্যু লেজ গুটিয়ে পালাবে।’
সমাবেশে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও আরেক সমন্বয়ক আখতার হোসেন বলেন, ‘হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে কিন্তু দেশে এখনো স্বৈরাচার রয়ে গেছে। সারাদেশে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা যে অপকর্ম চালাচ্ছে আমরা ছাত্রসমাজ সকল অপকর্ম শক্ত হাতে দমন করবো। আমাদের দেশে যারা অমুসলিম আছে তাদের উপর হামলা হতে পারে। আমরা ছাত্রসমাজ তাদের নিরাপত্তায় বুক পেতে দিব। আর সামনে ১৫ আগস্ট নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করছে আমরা তাদের ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই সফল হতে দিব না। আমরা মাসের পর মাস রাজপথে থাকবো তবুও আমাদের বিপ্লবকে ব্যর্থ হতে দিব না।’
সমাবেশ শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্য থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ হয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রদক্ষিণ করে।