বৈষম্যবিরোধী পেশাদার সাংবাদিক ঐক্য-এর আহ্বায়ক এবং চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ইউনিটি(সিআরইউ) এর সাধারণ সম্পাদক আলমগীর নূর চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উত্থাপন করেছেন।

আলমগীর নূর বলেন, পেশাদার সাংবাদিকতার বদলে এখানে দালালি সাংবাদিকতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবকে একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ের মতো ব্যবহার করছে স্বৈারাচারের দোসররা। পেশাগত দায়িত্বের বাইরে গিয়ে প্রেস ক্লাবকে দানব ও গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার দলের দলীয় অফিসের মত উত্তর দক্ষিণ মহানগরের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হয়েছে। বিএনপি বা বিগত সরকারের বিরোধী দলের সংবাদ বা নেতাদের সাথে ছবি দেখলে মামলায় ফাঁসিয়ে দিতো প্রেস ক্লাবের এই দুর্বৃত্তরা। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের দায়িত্বশীল দালাল সাংবাদিকদের কারণে ন্যায়সঙ্গত ও বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশন করতে বাধাগ্রস্ত হন অন্যান্য সাংবাদিকরা। কোনো সাংবাদিক আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো সংবাদ প্রচার করলে প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে ডিজিএফআই দিয়ে ফোন করিয়ে সাংবাদিকদের হুমকি প্রদান করা হতো। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার বিপ্লবের সময় সময় ছাত্র-জনতার তালিকা করে করে প্রেস ক্লাবের এই দালাল সাংবাদিকরা বিভিন্ন থানায় দিয়েছেন। এমনকি ছাত্র-জনতাকে পুলিশের ভ্যানে তুলে দেয়ার মতো জঘন্য কাজও করেছেন প্রেস ক্লাবের দুর্নীতিবাজ নেতারা।

গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা প্রেস ক্লাবের এই দালাল সাংবাদিকদের খুঁজতে আসলে প্রাণ নিয়ে পালায়। দীর্ঘদিন যারা প্রেস ক্লাবের বাইরে ছিল তারা তখন উত্তেজিত ছাত্র-জনতার হাত থেকে ক্লাবকে রক্ষা করেন।

নিয়মের বাইরে গিয়ে কিছু করার পক্ষে আমি কখনো ছিলাম না আগামীতেও থাকব না। এক কথায় বৈষম্যের বিরুদ্ধে, সাম্যের পক্ষে আমার অবস্থান সব সময়। আমি ব্যাক্তিগতভাবে কখনো পেশাগত দায়িত্বের বাইরে গিয়ে কিছু করার চেষ্টা করিনি এবং আগামীতেও করব না। বাস্তব সত্য সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে হয়তো কেউ আমাকে পছন্দ নাও করতে পারে। তবুও বাস্তব জীবনে আমি সব সময় সত্য এবং বাস্তবতার পক্ষে। আমি সবসময় ক্ষমাশীল একজন ব্যক্তি। সংস্কার ও শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রক্রিয়ার পক্ষে সব সময় আমার অবস্থান থাকবে।

এই প্রেস ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে গেছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান। আওয়ামী পরিবারের সদস্য চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাসও দায়িত্বে ছিলেন। উনারা কখনো এভাবে প্রেস ক্লাবকে দলীয়করণ করেনি বলে ক্লাব সংশ্লিষ্টদের অভিমত।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বর্তমান কমিটির এমন কর্মকান্ডের জন্য সৎ নীতিবান সাংবাদিকরা এখন সাধারণ মানুষের প্রশ্নে জর্জরিত হচ্ছেন। প্রেস ক্লাবের নেতা পরিচয়ে গুটিকয়েক সাংবাদিক ১/১১ এর পটভূমি থেকে আজ অবধি কয়েকশ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিকও তারা। চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে পেশাদার ও নীতিবান সাংবাদিকরা দাবি তুলেছেন, প্রেস ক্লাবের নেতাদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান দুদককে করতে হবে। কালিমামুক্ত করতে হবে সাংবাদিক সমাজকে।