স্টাফ রিপোর্টার : যাত্রাবাড়ী-মাওয়া-ভাঙ্গা রুটে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন।
দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুর সর্বোচ্চ সুবিধা যাতে দেশের মানুষ পান, সেজন্য আধুনিক মহাসড়কের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রেখে তৈরি করা হয়েছে এক্সপ্রেসওয়ে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে মাওয়া হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত বিস্তৃত এ মহাসড়ক। এতে ছোট-বড় যানবাহনের জন্য রয়েছে আলাদা লেন, লেন ধরে একদিকেই সব গাড়ির চলাচল, ক্রসিং এড়াতে উঠেছে ফ্লাইওভার, রয়েছে আন্ডারপাস- আধুনিক ট্রাফিক সুবিধার সঙ্গে দৃষ্টিনন্দন ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে।
এক্সপ্রেসওয়ের দুটি অংশ পদ্মা সেতুর মধ্য দিয়ে সংযুক্ত হবে, যা নির্মাণাধীন। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে ভাঙ্গা থেকে ঢাকা আসা-যাওয়ায় এক ঘণ্টাও লাগবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পদ্মার সেতুর সুবিধা নিতে এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এই সড়কের কাছে ইউরোপের অনেক সড়ক হার মানবে। এই সড়ক বাংলাদেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে, চার লেন নয়, দুদিকে সার্ভিস লেনসহ এই এক্সপ্রেসওয়ে বাস্তবে ছয় লেনের যা নির্মাণে ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হওয়ার কথা জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, এখানে ৪৪টি কালভার্ট, ১৯টি আন্ডারপাস, চারটি বড় সেতু, ২৫টি ছোট সেতু, পাঁচটি ফ্লাইওভার, দুটি ইন্টার-চেইন, চারটি রেলওয়ে ওভারপাস রয়েছে।
ওবায়দুল কাদের আরও জানান, এটি অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন একটি সড়ক। আমার মনে হয়, ইউরোপের অনেক দৃষ্টিনন্দন সড়ককেও হার মানাবে। এতো চমৎকারভাবে এটি করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এর দায়িত্বে ছিল। মহাসড়কটি এশিয়ান হাইওয়ে করিডোরের অন্তর্ভুক্ত। সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে বলে জানান তিনি।
৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশ ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার, আর পদ্মা সেতুর ওই পাড়ে পানছার থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার। এই এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বাসিন্দাদের রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত সুগম হবে। বরিশাল বিভাগের ছয়, খুলনার দশ এবং ঢাকা বিভাগের ছয় জেলাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মোট বাইশ জেলার মানুষ সরাসরি এই এক্সপ্রেসওয়েতে উপকৃত হবেন বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান। প্রকল্পটি আগামী ২০ জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তিন মাস আগেই তা শেষ হয়েছে বলে জানান সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ।
এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচটি ফ্লাইওভারের মধ্যে একটি ২ দশমিক ৩ কিলোমিটার কদমতলী-বাবুবাজার লিংক রোড ফ্লাইওভার। অন্য চারটি ফ্লাইওভার করা হয়েছে আবদুল্লাহপুর, শ্রীনগর, পুলিয়াবাজার ও মালিগ্রামে। জুরাইন, কুচিয়ামোড়া, শ্রীনগর ও আতাদিতে চারটি রেলওয়ে ওভার ব্রিজ এবং চারটি বড় সেতু রয়েছে।
