স্টাফ রিপোর্টার : স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, তিনি নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন। এটি কেউ প্রচার করলে তা ঠিক নয়। তিনি বলেন, আর সবাই যেভাবে আছেন, আমিও সেভাবেই আছি।
আজ রোববার দুপুরে আইইডিসিআরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে বাসা থেকে যুক্ত হয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এমন খবরের সত্যতার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনেক বড় মন্ত্রণালয়। অনেক লোক সেখানে আসে। অনেক বিদেশিরা আসে। তাদের কারো সংক্রমণ থাকলে তার সংস্পর্শে এসে কোনো কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।
তিনি হোম কোয়ারেন্টিনে আছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি করোনায় আক্রান্ত নই। টেস্ট করেছি; কোয়ারেন্টিনে নই। এ মুহূর্তে সবাই যেভাবে রয়েছেন; আমিও সেভাবে বাসায় আছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অনেকে বলছেন আমাদের ভেন্টিলেটর সংখ্যা মাত্র ২৯টি। যেটা সঠিক নয়। আমাদের কাছে ৫০০’র কাছাকাছি ভেন্টিলেটর আছে। আরও সাড়ে তিনশ আসছে। কাজে আমি মনে করি বিভ্রান্ত করার মতো কোন সংবাদ পরিবেশন করা উচিত না। এখন আমাদের কাজ হলো সকলে মিলে একযোগে কাজ করা। যেটা এখন আমরা করছি। কারণ আমাদের সঙ্গে আছে পুরো দেশবাসী। আমার পরামর্শ থাকবে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে যে নিয়মগুলো দেওয়া রয়েছে সেগুলো পালন করে চলুন।
তিনি বলেন, বলা হচ্ছে করোনা নিয়ে সরকারের প্রস্তুতি নেই। এটা সঠিক নয়, গত জানুয়ারি থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে বিমানবন্দরে স্ক্যানিং জোরদার করা হয়েছে। কিন্তু প্লেন কমানো বা বিদেশিদের আগমন ঠেকানোর কাজ তো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের না! যারা এখনো আজও আসছেন সেটাও ঠেকানোর ক্ষমতা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নাই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিকিৎসা ব্যবস্থা দিতে পারে।
অনেক ব্যবসায়ী বলতেন, আমাদের এই অবস্থার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দায়ী। কিন্তু ব্যবসায়ীদের বুঝতে হবে ইউরোপ, আমেরিকা থেকে অর্ডার ক্যানসেল হয়েছে। সেটা তো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে মেকআপ করতে পারবে না। এ ধরনের কথা থেকে বিরত থাকা উচিত বলে উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, সভা-সমাবেশ করবেন না। কোয়ারেন্টাইনে থাকার নিয়ম মেনে চলুন। কোয়ারান্টাইনে দরজা জানালা ভেঙে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত না। ব্যক্তিগত শিষ্টাচার বজায় রাখা বা ডিসটেন্স রক্ষা করা, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলুন।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিনিয়ত আপডেট করে যাচ্ছি। গত দুই মাস আগেও কিন্তু কোনো ব্যক্তি আমাদেরকে বলে নাই যে করোনা আসছে। করোনা আসলে এ ব্যবস্থা করতে হবে। এটা কেউ বলেনি, আমরা নিজেদের উদ্যোগে করেছি। প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন সেটা আমার ফলো করছি।
তিনি বলেন, এখন পিপিইর সংকট নাই। পিপিই বিতরণ করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যাদের পিপিই জরুরি তারাই পাবেন। বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে পিপিই সরবরাহ করবে।
৪৫ হাজার কিট মজুত আছে আরো ৮৫ হাজার আসছে। ১১টি জায়গা থেকে করোনার টেস্ট করা হবে। ইতোমধ্যে ৫/৬টি জায়গা থেকে শুরু হয়েছে। বাকিগুলো শিগগিরই চালু হবে। যাদের লক্ষণ আছে শুধু তাদের টেস্ট হচ্ছে। সবারটা সম্ভব না। সর্দি-কাশি হলেই করোনা হয়েছে এমনটা ভাবা ঠিক না। সরকারি হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোনো সংস্থাকে পিপিই দেয়ার দায়িত্ব স্বাস্থ্য অধিদফতরের নয়।