স্টাফ রিপোর্টার : পাবনা জেলার বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ভোর পাঁচটায় শামসুর রহমান মারা যান। তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
মৃত্যুকালে শামসুর রহমানের বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি ৫ ছেলে ও ৫ মেয়ের বাবা ছিলেন। তার স্ত্রী কামরুন্নাহার শরীফ ঈশ্বরদী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি।
১৯৪০ সালের ২৬ ফাল্গুন তিনি জন্মগ্রহণ করেন। এবছরই তিনি ৮০ বছর পূর্ণ করে ৮১ তে পা দিয়েছিলেন। প্রায় ৭ মাস ধরে তিনি বার্ধক্য ও দুরারোগ্য রোগে ভুগছিলেন। প্রথমে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি লন্ডনে গিয়ে চিকিৎসাগ্রহণ করেন।
লন্ডন থেকে ফিরে কিছুদিন ভাল থাকার পর অসুস্থ হলে আবারো ল্যাবএইডে ভর্তি হন। সেখান হতে তাকে ভারতের মুম্বাই টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে প্রায় দুই মাস চিকিৎসা গ্রহণের পর ঢাকায় ফিরে আসেন। পরে আবারও তাকে ল্যাবএইডে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়। ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকি’সাধীন অবস্থায় আজ ভোরে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।
পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘোড়িয়া) আসনের এই সংসদ সদস্য রাজনৈতিক জীবনে অত্যাচার, জেল-জুলুম ও নির্যাতন সহ্য করেছেন। এক সময়ের প্রতাপশালী জমিদার বংশের সন্তান শরীফ পাবনা জিলা স্কুলের ছাত্র থাকাবস্থায় ভাষা আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালে ঈশ্বরদী ও পাকশী এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করার কাজে তার ভুমিকা ছিল অনন্য।
শরীফ একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে ২৯ মার্চ ঈশ্বরদীর মাধপুরে পাকবাহিনীর প্রতিরোধ যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন। পঁচাত্তরে পট পরিবর্তনের পর তিনি দীর্ঘদিন বিনা বিচারে জেলখানায় বন্দি জীবনযাপন করেন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলনে পাবনা জেলায় তার ভূমিকা ছিল অনন্য।
১৯৯৬ হতে ২০১৮ পর্যন্ত পরপর পাঁচবার পাবনা- ৪ (ঈশ্বরদী ও আটঘড়িয়া) আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ১০ম জাতীয় সংসদে ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।