ইবি প্রতিনিধি: কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য মিললেও এ ছুটি মিলেনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীদের। সবাই যখন ছুটিতে, তখনও ক্যাম্পাসে রয়ে গেছেন তারা। হাজারো শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখরিত ক্যাম্পাসে এখন সুনসান নিরবতা। থেমে থেমে শোনা যাচ্ছে নাম না জানা শত রঙ-বেরঙের পাখির সুর। কোলাহল মুক্ত ১৭৫ একরের ফাঁকা ক্যাম্পাসে কেমন কাটছে নিরাপত্তা প্রহরীদের দিনগুলি। তাদের সাথে কথা বলে জানাচ্ছেন-মো: রিয়াদ।
রিগান আহমেদ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিরাপত্তাকর্মী বলেন, আগেও যেমন ছিলাম, এখনও তেমন আছি। আমাদের তো কাজই এটাই। আগে যেমন সারা দিন একই স্থানে বসে ডিউটি দেওয়া হত, এখনও তাই। এবারের ঈদ উৎযাপন নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কপালে কি সেই সুখ আছে? ছুটিতে সবাই বাড়ি, আর আমরা এখানে। পরিবার ছেড়ে এখানেই সহকর্মীদের সাথে ছোট পরিসরে ঈদ পালন করেছি।
ওমর ফারুক নামে আরেক নিরাপত্তাকর্মী বলেন, কিছু ঝুকি সত্ত্বেও কাজ করে যাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করোনা সুরক্ষায় মাস্ক, ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার পেয়েছি। মেইন গেইট ও ভিসির বাঙলোই থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা এপ্রোন পেয়েছে। কিন্তু আমরা যারা ভেতরে আছি আমাদের দেওয়া হয় নি। মেইন গেইট ও ভিসির বাঙলোর আশে পাশে লোকের আনাগোনা একটু বেশি। আর আমরা যারা ভেতরে বিভিন্ন হল, ভবনে ডিউটি দিচ্ছি, ওদের চেয়ে আমাদের করোনার ঝুঁকি কম। আমাদের এদিকে লোকজন অল্প আসে। আমরা একদম নিরিবিলি পরিবেশের মধ্যে ঝুঁকি মুক্ত পাহারা দিচ্ছি। এভাবেই ভালোভাবে দিন কেটে যাচ্ছে।
সাগর নামে একজন নিরাপত্তাকর্মী বলেন, এখন বিশ্ববিদ্যালয় একেবারে ফাঁকা। পাখির কিচিরমিচির শব্দ কানে ভেসে আসে প্রতিনিয়ত। এ অনুভূতিটা খুব ভালো লাগে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকলে অনেকের সাথে গল্প করে, ছাত্র-ছাত্রীদের চলোফেরা দেখেও সময় ভালোই যেতো। কিন্তু এখন ক্যাম্পাস একদম শুন্য শুন্য লাগে। একদম ঘাপটি মেরে থাকতে হয়। গাছ-গাছালি, প্রকৃতি দেখে সময় কেটে যায়। পরিস্থিতি ভালো হয়ে শিক্ষার্থীরা দ্রুত ক্যাম্পাসে ফিরে আসুক এটাই চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনা প্রতিরোধ সেলের আহ্বায়ক ও প্রক্টর প্রফেসর ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ বলেন, নিরাপত্তাকর্মীদের করোনাকালীন ডিউটির জন্য অতিরিক্ত কোন ভাতা দেওয়া হয় নি। তারা আমাদের স্থায়ী কর্মী না। অন্য কর্তৃপক্ষের অধীনে। আমাদের এখানে প্রয়োজনীয় অনুপাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপত্তাকর্মী নেই। তাদের চাহিদা অনুযায়ী করোনা থেকে সুরক্ষায় মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও এপ্রোন দিয়েছি। আমাদের লিমিটেশনের কারণে হয়তো সবগুলো দেওয়াও সম্ভব হয় নি। তারা পুণরায় এসবের দাবি করলে সাধ্যমতো দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।