মীরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : কৃষি প্রধান জনপদ চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলায় শুরু হয়েছে আউশ ধান কাটার উৎসব। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আউশের ফলন দেখে কৃষকের মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটেছে। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন হওয়ায় আউশ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। মীরসরাই উপজেলার কৃষকরা উন্নত জাতের (ব্রি. ধান-৪৮) আউশ ধান চাষ করে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি ফলন পেয়েছে। তবে উপজেলার ১৬নং সাহেরখালী ইউনিয়নের আউশের আবাদ বেশি হয়েছে বলে জানা গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২ পৌরসভায় চলতি মৌসুমে ৭ হাজার ১ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদ করার লক্ষ্যমাত্রা হলেও আবাদ করা হয় ৭ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে, উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২৫ হাজার ২শ মেক্ট্রিক টন। উপজেলা ব্যাপী লক্ষ্যমাত্রার চাইতেও বেশি উৎপাদন হবে বলে আশাবাদী উপজেলা কৃষি অফিস ।
অতীতের মতো স্থানীয় জাত ও উন্নত জাতের ধান বীজ অনেকেই বিশেষ করে চরাঞ্চলের কৃষকেরা চাষাবাদ করে থাকেন। ধান বীজ গুলো কাজলআইল, চিনালধান, ভিন্নাতোয়া, ধলবাচাই, বৈলাম, আশ্বিনী, নাজিরআইল, বাধই, হলোই ধান, বাতুইধান, জিইস ধান, পাইজম ধান ইত্যাদি। সরকারী ধান বিএডিসি, বেসরকারী বীজ কোম্পানী মধ্যে সুপ্রীম সীড কোম্পানী, লালতীর, পাশাপাশি, মল্লিকা সীড, আলফা এগ্রো, ইউনাইটেট, এসিআই, অটো ক্রপকেয়ার এদের উল্লেখযোগ্য বি-৪৮, বি-২৮, বি-৪৩, বি-৭২ নং ধানের বীজ গুলো ভালো ফলন দিয়েছে।
উপজেলার ৯নং মীরসরাই সদর ইউনিয়নের গড়িয়াইশ গ্রামের (কৃষি বিষয়ক ক্লাব) আইপিএম ক্লাবের সভাপতি আউশ চাষী হানিফ ভুঁইয়া ও সজল দেবনাথ বলেন, আমাদের বাপ-দাদাদের আমল থেকে আমরা আমাদের চাষের জমি থেকে ধান বীজ সংগ্রহ করে সাধারণ চাষাবাদ করতাম। এতে সমস্য হলো বিভিন্ন ধরণে মিশ্রিত ধান হতো এবং ফসল ও কম হতো। ফলে আধুনিক চাষাবাদের তাল মিলিয়ে বিভিন্ন বেসরকারী কোম্পানীর উন্নতমানের হাইব্রীড ধান বীজ সংগ্রহ করে ভালো ফলন ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছি।
১৩ নং মায়ানী ইউনিয়নের ঘড়ি মার্কেট এলাকার কৃষক মো.জসিম জানান, সার, বীজ, কীটনাশক এর দাম বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। ফসল যাই হোক না কেন বিগত বছর গুলোতে কৃষক ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ সাহা বলেন, এই উপজেলার কৃষকরা আগে স্থানীয় আউশ ধানের আবাদ করত। এই বছর সরকার কৃষকদের বিভিন্ন ধরণের প্রণোদনা, বীজ ও সার দিয়ে চাষীদের উৎসাহিত এবং সহযোগীতা করেছে। এতে কৃষকেরা উৎসাহিত হয়ে ব্যাপক চাষ করেছে এবং বাম্পার ফলন হয়েছে।