সিলেট ব্যুরো : সিলেটে উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা ছক চূড়ান্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।। অন্যদিকে শেষ সময়ে ব্যস্ততা বেড়েছে কারিগরদের। প্রতিমা নির্মাতা শিল্পীরা বাঁশ খড়ের কাজ শেষ করে মাটির কাজ করছেন। কেউবা মূর্তির উপর রং তুলির কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে এবার মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে পূজা অনুষ্ঠান ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
মন্ডপের সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি মাঠে থাকাবে পুলিশের চৌকস কর্মকর্তারা। আর যারা মন্ডপে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন তাদেরকে তদারকি করবেন পুলিশের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারাবৃন্দ। পূজা উদযাপন পরিষদসহ মন্ডপের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেছে থানা পুলিশের পাশাপাশি সিলেট মহানগর পুলিশ। এছাড়া নিরাত্তার স্বার্তে কয়েকটি শর্তও বেঁধে দিয়েছে মহানগর পুলিশ।
এবার সিলেট বিভাগে পারিবারিক, বারোয়ারি ও সার্বজনীন পূজামন্ডপ (স্থায়ী ও অস্থায়ী) ২৭৫৫ টি। এরমেধ্য সিলেট জেলায় ৫৮৪টি মন্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। মৌলভীবাজার জেলায় ১০৮৩, সুনামগঞ্জে ৪১২ ও হবিগঞ্জে এবার ৬৭৬টি পূজার আয়োজন করা হয়েছে।
সিলেট জেলায় ৫৮৪টি মন্ডপের মধ্যে মহানগর এলাকায় মোট ৬৪টি পূজার আয়োজন করেছেন পূজারীরা। এর মধ্যে সার্বজনীন পূজা ৪৯টি ও পারিবারিক পূজা ১৫টি। সিলেট সদর উপজেলায় সার্বজনীন পূজা ৫৭টি। দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় ২১টি পূজার আয়োজন করা হয়েছে। গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ৫৮টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। বালাগঞ্জ উপজেলায় ২৯টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। কানাইঘাট উপজেলায় সার্বজনীন পূজা ৩৫টি। জৈন্তাপুর উপজেলায় সার্বজনীন পূজা ২২টি। বিশ্বনাথ উপজেলায় সার্বজনীন পূজা ২৬টি। গোয়াইনঘাট উপজেলায় এবার ৩৯টি পূজার আয়োজন করা হয়েছে। জকিগঞ্জ উপজেলায় জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এ উপজেলায় এবার সার্বজনীন পূজা ৮৪টি। বিয়ানীবাজার উপজেলায় ৫১টি মন্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ২৮টি মন্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় ৩৭টি পূজার আয়োজন করা হয়েছে। আর ওসমানীনগর উপজেলায় ৩৩টি পূজার আয়োজন করা হয়েছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোর্তিময় সরকার বলেন, সিলেট মহানগরী এলাকায় যতগুলো পূজা মন্ডপ রয়েছে সবগুলোর তালিকা করে পুলিশ ইতোমধ্যে নিরপত্তার ছক চূড়ান্ত করেছে। মন্ডপে সাদা পোষাকের পুলিশের পাশাপাশি পোশাকধারী পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও মাঠে কাজ করবে গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম। কেউ কোন বিশৃঙ্খলার চেষ্টা চালালে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা জানান, এবছর সরকার ঘোষিত স্বাস্থবিধি মেনে শারদীয় উৎসব সুষ্ঠু সুন্দর ও সফল করতে হবে। এজন্য তিনি সকলের সহযোহিতা কামনা করেন ।
তিনি আরও জানান, পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয়, জেলা ও মহানগর শাখার বৈঠকে ৩৮টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সিদ্ধান্তের মধ্যে নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ভলন্টিয়ার রাখা, আলোক সজ্জা করা যাবে না, সাউন্ড সিস্টেম ও মাইক বাজানো যাবে না, বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, প্রসাদ উন্মুক্ত রাখা যাবে না, আরতির পর মন্দিরে দর্শনার্থী আসা নিরুৎসাহিত করা, জেলায় পূজার সার্বিক বিষয় মনিটরিং করার জন্য একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হবে। পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলায় মনিটরিং সেল রাখা হবে। আর প্রতিমা বিসর্জন ২৬ অক্টোবর বেলা ২টা থেকে রাত ৮ টার মধ্যে করতে হবে।