স্বাধীন বাংলা রিপোর্ট: কলেজ কর্তৃপক্ষ বিকল্প ব্যবস্থা না করায় ঝুঁকি নিয়েই ছাত্রাবাসে থাকতে হচ্ছে রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের এক ছাত্রাবাসের অর্ধেক শিক্ষার্থীকে। গত ২ অক্টোবর ‘আক্কাছুর রহমান আঁখি’ ছাত্রাবাসের ২১২ নম্বর কক্ষের ছাদ ধসে পড়ার পর ৫০ শতাংশ কক্ষকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। কলেজটির ছাত্রদের একমাত্র এই হোস্টেলের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ছাত্রাবাস ছাড়তে রাজি হচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। ঝুঁকিপূর্ণ সব রুমেই ছাত্ররা থাকছে। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না করে খালি করার কথা বলায় কেউ রুম ছেড়ে যায়নি, বলেন ২১৩ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা মিজানুর রহমান। এ কক্ষসহ মোট ২১টি কক্ষকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ঘোষিত কক্ষগুলোর মধ্যে আরও আছে নিচ তলার ১০৪, ১০৫, ১০৬, ১০৮ ও ১০৯ নম্বর, দ্বিতীয় তলার ২০২, ২০৫, ২০৬, ২০৮, ২০৯, ২১১, ২১২ ও ২১৭ নম্বর এবং তৃতীয় তলার ৩০১, ৩০২, ৩০৩, ৩০৫, ৩০৭, ৩০৯ ও ৩১৯ নম্বর কক্ষ। মিজান বলেন, বললে তো আর সাথে সাথে বের হওয়া যায় না। আমরা চাই, কক্ষগুলোর সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ হোক। কবে থেকে এ কক্ষগুলোর সংস্কার শুরু হবে তা বলতে পারেননি তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবু হায়দার আহমেদ নাসেরও। তিনি বলেন, এটা সরকারের ব্যাপার, তারা টেন্ডার করবে, তারপর সংস্কার শুরু হবে। ৫৫ হাজার শিক্ষার্থীর সরকারি তিতুমীর কলেজে ছাত্রাবাস মাত্র তিনটি। এরমধ্যে ছাত্রীদের আবাসনের জন্য রয়েছে দুটি ছাত্রাবাস, যার একটির অবস্থান কলেজ ক্যাম্পাসে, অন্যটি বনানীতে। ১৯৮৩ সাল থেকে তিতুমীর কলেজের ছাত্রাবাস হিসাবে ব্যবহৃত আক্কাছুর রহমান আঁখি ছাত্রাবাসের ৪৬টি কক্ষে মোট ১৮৮ জনের আবাসনের ব্যবস্থা আছে। তবে থাকে প্রায় ৫০০ জন। সে হিসেবে ঝুকিপূর্ণ কক্ষে প্রায় ২৫০ শিক্ষার্থী অবস্থান করছে বলে ছাত্রাবাসের বাসিন্দারা জানিয়েছেন। কবে এসব কক্ষের সংস্কার কাজ শুরু হবে তাও জানেন না তারা। প্রকৌশল দপ্তর থেকে লোক এসে ফাটল ধরা অংশ ভেঙে দিয়ে গেছে। বলা হয়েছে দ্রুত সময়ে সংস্কার করা হবে। এক মাস শেষ হতে চলল, কিন্তু সংস্কার করা হয়নি, বলেন ৩০২ নম্বর রুমের বাসিন্দা নীরব আহসান রাসেল। কখন ভেঙে পড়ে তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নাই। আবার কলেজ থেকে বলা হচ্ছে, দুর্ঘটনা ঘটলে দায়দায়িত্ব ছাত্রদের। অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবু হায়দার বলেন চিফ ইঞ্জিনিয়ার সাহেব (শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী) আসছিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে গেছেন, আমি খালি করার নোটিস দিয়েছি। ছাত্ররা রুম না ছাড়লে আমার কী করার? বিকল্প ব্যবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, হলই তো নেই। বিকল্প কোথায় পাঠাব? ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত কক্ষগুলোর সংস্কার কাজ ‘হচ্ছে’ বলে জানিয়েছেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মো. হানজালা। সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে, এরপর ওই কক্ষগুলোতে থাকা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, পলেস্তারা খসে পড়ায় কিছু কক্ষের সংস্কার করতে হবে। আমরা দুটি কক্ষকে বসবাসের অযোগ্য ঘোষণা করেছি। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে ফাটল ধরা সব কক্ষকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে নোটিস দিয়েছে।