মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ বাঁশগাড়ি নতুনকান্দি গ্রামে র‌্যাবের পোষাক পরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের নেতৃত্বে ২০-৫ জনের এক বাহিনী ইউপি সদস্য আকতার শিকদারের বাড়িতে গিয়ে হামলা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই ইউপি সদস্য। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেছেনে বলে অভিযোগ ইউপি সদস্যের। এ সময় তার চাচাতো ভাই কালইল শিকদারকে(২২)অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে গুরুতর আহত ইউপি সদস্য আকতার শিকদারকে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নেয়ার পরে অবস্থার অপনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের সাথে ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আকতার শিকদারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। তারই জের ধরে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে র‌্যাবের পোষাক পরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল ইউপি সদস্য আকতার শিকদারের বাড়িতে গিয়ে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেছে। এ সময় তার চাচাতো ভাই মজিবর শিকদারের ছেলে কালইল শিকদারকে(২২) অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় বোমার বিস্ফোরণ ঘটনানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে গুরুতর আহত ইউপি সদস্য আকতার শিকদারকে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নেয়ার পরে অবস্থার অপনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল মেডিকেল জলেজে এবং দুপুরে অবস্থার আরো অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান সুমন, সেলিম, আব্দুল রশিদকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য খাসেরহাট তদন্তকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
 
ইউপি সদস্যের পিতা মতি শিকদার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান সুমনের নেতৃত্বে তার লোকজন র‌্যাবের পোশাক পরে আমাদের বাড়িতে এসে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় এবং আমার ছেলেকে মারাত্মকভাবে কুপিয়ে জখম করেছে। আমি এ হামলার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

কালাই শিকদারের পিতা মজিবর রহমান শিকদার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান সুমন র‌্যাবের পোশাক পরে বন্দুকসহ আরো লোকজন নিয়ে ভোররাতে বাড়িতে ভাতিজা ইউপি সদস্য আকতারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারাত্মকভাবে কুপিয়েছে এবং আমার ছেলে ধরে নিয়ে গেছে। আমরা এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।
 
মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বদরুল আলম মোল্লা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের সাথে ইউপি সদস্য আকতার শিকদারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। তারই জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে। ইউপি চেয়ারম্যানসহ তার লোকজনকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য খাসেরহাট তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে এসেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিয়েছি। এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।

তিনি আরো জানান, ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন আমাদের কাছে বলেছেন, ইউপি সদস্যকে মারধরের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তার কোন লোকজন এঘটানার সাথে জড়িত নয়।

র‌্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, মাদারীপুরের কালাই শিকদারের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা আছে। সে মামলায় ওয়ারেন্ট ছিল। ওয়ারেন্টের আসামি ধরার জন্য আমাদের র‌্যাব সদস্য গিয়েছিল। আমরা তাকে নিয়ে এসেছি। এখন জানতে পারলাম তিনি কিছুদিন পূর্বে আদালত থেকে জামিন নিয়ে গেছেন। আমরা তাকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দিবো। কাউকে মারধরের বিষয়ে আমরা কোন কিছু জানিনা। আমাদের পোষাক চেয়ারম্যান বা অন্য লোকজন পরবে কেন। এ বিষয়েও আমি কিছু জানিনা। আমরা সব সময় মানুষের উপকার করার চেষ্টা করি। কারো ক্ষতি করি না।