ক্রড়ী ডেস্ক : লিওনেল মেসি। আর্জেন্টাইন এ ফুটবল জাদুকরের দলবদল নিয়ে চলা তিন ক্লাবের লড়াই শেষ হয়েছে। যেখানে মেসির সাবেক ক্লাব বার্সেলোনা ও সৌদির আল হিলালকে পেছনে ফেলে জিতেছে আমেরিকান মেজর সকার (এমএলএস) ক্লাব ইন্টার মিয়ামি।
সর্বশেষ কাতার বিশ্বকাপের পর থেকেই পিএসজির আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসির দলবদলের আলোচনা শুরু হয়। ক্ষণে ক্ষণে বাঁক নিয়েছে সেই গুঞ্জন। অবশেষে বার্সেলোনা ও আল হিলালের আশায় গুড়েবালি করে দিয়ে মিয়ামি মেসিকে দলে ভিড়িয়েছে।
৩২ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তায় মেসির সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মিয়ামি। লিওনেল মেসিও তার নতুন ঠিকানার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সঙ্গে পরিষ্কার করেছেন নানা বিষয়।
এর আগে গতকাল স্প্যানিশ সাংবাদিক গিলেম বালাগ মেসিকে নিয়ে প্রথম সেই চমকে দেওয়া খবর দিয়েছিল। তার মতে, সম্প্রতি পিএসজিকে বিদায় বলা এই ফরোয়ার্ড মিয়ামিতে যেতে রাজি হয়েছেন। তবে বাকি ছিল মেসির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।
কেন পিএসজি ছাড়লেন, সৌদি লিগে কেন গেলেন না। বার্সায় কেন তার ফেরা হলো না; মেসি এসব বিষয়ে স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম স্পোর্ত ও মুন্ডো দের্পোতিভোকে সাক্ষাৎকারে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
মিয়ামিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে মেসি বলেন, ‘আমি বার্সেলোনায় ফিরছি না। মিয়ামিতে যাচ্ছি। শুনেছি আমাকে নিলে তাদের বেশ কিছু খেলোয়াড়ের বেতন কাটতে হবে এবং বিক্রি করতে হবে। আমি এভাবে ফিরতে চাইনি।’
মেসিকে চুক্তি করে রাখতে বলেছিল বার্সা। এরপর খেলোয়াড় বিক্রি এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক চুক্তি থেকে অর্থ আসলে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে চেয়েছিল। সেটা চাননি জানিয়ে মেসি বলেন, ফেরার বিষয়ে আমি খুব উচ্ছ্বসিত ছিলাম। কিন্তু ক্লাব ছাড়ার সময় যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে (আর্থিক সংকটের দোহায়), একই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও যেতে চাইনি।
মেসি বলেছেন, আমি আমার সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে চেয়েছি, পরিবার ও সন্তানদের কথা ভাবতে চেয়েছি। কী ঘটে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করে থাকা এবং নিজের ভাগ্য অন্যের হাতে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি আমার পছন্দ হয়নি।
লা লিগা কর্তৃপক্ষ মেসিকে আনার বিষয়ে সাড়া দিয়েছিল। কিন্তু আর্থিক সংকট বার্সারই সমাধান করতে হতো। মেসি বলেছেন, শুনেছি, লা লিগা কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দিয়েছিল। তারপরও অনেক কিছুর উত্তর মেলাতে হতো। বার্সার খেলোয়াড় বিক্রি করতে হতো এবং অনেকের বেতন কাটতে হতো। সত্যি বলতে, আমি সেটা চাইনি। আমার বার্সা ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে। যার অনেকগুলো সত্য নয়। এসব নিয়ে আমি কিছুটা ক্লান্তও। নতুন করে এসবের মধ্য দিয়ে যেতে চাইনি।
সৌদি আরবে গেলে মোটা অঙ্কের অর্থ পেতেন মেসি। তবে প্রতি পদে পদে সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামও হতে হতো। মেসি তা চাননি, এমন একটা জায়গা চেয়েছি, যেখানে আমি কিছুটা আলোর বাইরে থাকবো, পরিবারের জন্য একটু বেশি কিছু করবো।
পিএসজি ছাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে উপভোগ না করার কথা বলেছেন মেসি, দুই বছর এমন একটা জায়গায় ছিলাম, পারিবারিক বিবেচেনায় সময়টা আমি উপভোগ করিনি। ভালো সময়ও গেছে। আমি বিশ্বকাপ জিতেছি। কিন্তু ওই সময়টা বাদ দিয়ে, সেখানে আমার জন্য সময়টা কঠিন ছিল। আমি নতুন করে জীবন উপভোগের বিষয়টি আবিষ্কার করতে চাই। পরিবার, সন্তানদের নিয়ে প্রতিটা দিন উপভোগ করতে চাই। বার্সায় না যাওয়ার ক্ষেত্রে এটা বড় ভূমিকা রেখেছে।