চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জন্ম হওয়া যমজ শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সোমবার ভোর ৫টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিবন্ধী দম্পতি রুবেল আর আঙ্গুরী বেগমের কোলে আসে যমজ শিশু। তাদের পেটের নিচ থেকে জোড়া লাগানো, পায়ুপথও একটি। জটিল চিকিৎসার ব্যয়ভার আর অস্ত্রোপচারের জটিলতা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। পরে জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজের সহায়তায় যমজ শিশুকে ঢাকায় পাঠানো হয় বলে জানা যায়।
সূত্র জানায়, রামেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, সেখানে যমজ শিশু দুটিকে আলাদা করা সম্ভব নয়; পরামর্শ দেন ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু অর্থ না থাকায় বাবা দিনমজুর রুবেল হোসেন বাধ্য হয়ে শিশুদের ফিরিয়ে নিয়ে আসেন বাড়িতে। এ খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ ও সিভিল সার্জন জাহিদ নজরুল চৌধুরী প্রাথমিক সহায়তা হিসেবে ৫০ হাজার টাকা এবং চারটি কম্বল প্রদান করেন ওই যমজ শিশুকে। দ্রুত চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসক একটি অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো ব্যবস্থা করেন।
প্রতিবেশীরা বলছেন, রুটির দোকানের দিনমজুর রুবেল হোসেন। বিদিরপুর রেল বস্তির এই দম্পতি এমনিতে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন যাপন করেন। গর্ভকালীন প্রতিবেশীদের সহায়তায় কোনোমতে দিনাতিপাত করেছেন। গত রোববার অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় আঙ্গুরী বেগমকে। কিন্তু জেলায় এ ধরনের চিকিৎসা সম্ভব না হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ধার-কর্য করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, এটি অবশ্যই জটিল একটি চিকিৎসা। এটিকে আমরা কনজয়েন্ট টুইন বলি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্ত্রোপচার করা গেলে সফলতা সম্ভব। এর আগেও দেশে এ ধরনের চিকিৎসা হয়েছে। দ্রুত অস্ত্রোপচার করা গেলে শিশু দুটিকে বাঁচানো সম্ভব।
জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, বিষয়টি জানার পরই আমি তাদের দেখতে এসেছি। যমজ শিশুদ্বয়ের দ্রুত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাইস চ্যান্সেলরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি দ্রুত শিশু দুটিকে ঢাকায় পাঠাতে বলেছেন। এ জন্যই তাদের দ্রুত ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।