হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি :
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর সাজানো মামলায় জেল খাটছেন স্বামী আরিফ (৩০) হোসেন। আরিফকে ফাঁসাতে তাঁর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে ভুয়া মেডিক্যাল ডকুমেন্ট তৈরি করে আরিফের বিরুদ্ধে ভ্রুণ হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের করে।

জানা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার মনতলা ভূঁইয়া বাড়ির হাসান ভূঁইয়ার কন্যা মরিয়ম আক্তারের (১৮) সাথে হাজীগঞ্জ উপজেলার আরিফ হোসেনের সাথে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক গতবছরের মার্চ মাসে দুই লক্ষ টাকা দেনমোহরে পঞ্চাশ হাজার টাকা উসুল মূলে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মরিয়ম উশৃংখল জীবন যাপন করতে শুরু করে বলে অভিযোগ করেন আরিফের পরিবার। মরিয়মের পরিবারকেও বিষয়টি জানায় আরিফের পরিবার। এতে, মরিয়ম এ ব্যাপারটি নিয়ে স্বামী আরিফের উপর খুব ক্ষিপ্ত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বিয়ের দুই মাস পর মরিয়ম আত্মহত্যা করার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে মরিয়মকে শুধরানোর জন্য তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কয়েকমাস পর আবার ফিরে এসে আগের চেয়ে আরো বেশ বেপরোয়াভাবে চলতে থাকে এবং মাঝে মধ্যে আরিফের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের উপর চড়াও হতে শুরু করে।

এক পর্যায়ে অতিষ্ট হয়ে আরিফ এবং মরিয়মের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে আবারও শালিস বৈঠক হয়। শালিসীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মরিয়মকে তাঁর পিত্রালয়ে এবং আরিফের বাড়িতে যাওয়া আসার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। পরে গত ২০ জানুয়ারি মরিয়ম তাঁর পিত্রালয়ে গিয়ে ফিরে না এসে স্বামী আরিফকে ফোনে করে বলে-তুমি আমাকে তালাকনামা পাঠিয়ে দাও। আমি তোমার সংসার করতে রাজি নই। এরই প্রেক্ষিতে আরিফ তারঁ স্ত্রীকে বার বার বাড়ি ফিরে আসার জন্য বলে ব্যর্থ হয়ে গত ১৮মে তালাকনামার কপি মরিয়ম ও ফরিদগঞ্জের স্থানীয় ৩নং সুবিদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বরাবর প্রেরণ করেন।

তালাকনামা পাওয়ার ১২ দিন পর আরিফ সহ তাঁর ৪ বোন ও বাবাকে বিবাদী করে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে দায়ের করেন মরিয়ম। এই মামলায় হাজিরা দিতে গেলে আরিফকে আটক করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

এদিকে এই ঘটনায় আরিফের পরিবারের সদস্যদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানীর অভিযোগ করেন আরিফের বোন ঝর্ণা আক্তার। তিনি বলেন, প্রাইভেট মেডিক্যাল থেকে ভূয়া ডকুমেন্টস তৈরি করে আমার ভাই আরিফের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাঁর সাবেক স্ত্রী মরিয়ম। হাজীগঞ্জ উপজেলার হলিকেয়ার ডিজিটাল মেডিক্যাল সেন্টার এন্ড হাসপাতালের পেশেন্ট আইডি নং ১১৬৬, তারিখ ২০/১২/২০২০ ইং এর যে আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট দিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন তা সম্পূর্ণ ভূয়া ও ভিত্তিহীন বলে জানান হাসপাতাল কতৃপক্ষ।

হাসপাতাল কতৃপক্ষ তাদের সফটওয়ার এর যাবতীয় তথ্য যাচাই বাছাই পূর্বক জানান এই আইডি এবং এই নামের কোনো রোগী হাসপাতালে আসেননি এবং এই নাম এবং নম্বরে কোনো রসিদ কাটা হয়নি।

আরিফের বোন বলেন, কতিপয় অসাধু আইনজীবীর অপকৌশলে ভুয়া ডকুমেন্টে মিথ্যা অভিযোগে আমার ভাই কারাগারে রয়েছে আর আমি সহ আমার পরিবারের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে এই মামলায়। আমরা এর সুষ্ট প্রতিকার চাই। ঝর্না আক্তার আরো জানান, মরিয়মের গর্ভে কোনো সন্তান ছিলো না। গত ১৯ জানুয়ারি মরিয়মকে আমরা যখন হাজীগঞ্জের সেন্টাল হাসপাতালে নিয়ে যাই তখন ডাঃ ফারহানা সুলতানা মরিয়মের পরিক্ষা নিরিক্ষা শেষে প্রতিবেদন দেখে বলেন মরিয়মের গর্ভে কোন সন্তান নেই। যার যাবতীয় ডকুমেন্ট আমরা সংগ্রহ করে রেখেছি।