মাসুম তালুকদার :
প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন মাত্র ৭/৮ মাস আগে। তবে সুখের সংসার আর করা হলো না সিলেটের ফারহানা আক্তার নাদিয়ার। পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানাধীন আমিনুর রহমানের ছেলে আসিফুর রহমান আসিফকে। কয়েক মাসের মাথায় গতকাল (শুক্রবার) রাতে তার রহস্যজনক মৃত্যু ঘটে। তার মৃত্যুর পর আসিফুর রহমান আসিফ পালিয়ে গেছে। রহস্যজনক এ মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, সিলেট মহানগরীর রায়নগরের বাসিন্দা মাছুম আহমদের মেয়ে ফারহানা আক্তার নাদিয়া ৭/৮ মাস আগে পরিবারের অজান্তে পালিয়ে গিয়ে রাজধানীর গেন্ডারিয়ার আসিফকে বিয়ে করেন। উভয় পরিবার এ বিয়ে মেনে না নিলে আসিফ গেন্ডারিয়ায় তার বাবার ১৪/২ নম্বর নিজ বাড়ীর অদূরে বাসা ভাড়া করে নাদিয়াকে নিয়ে থাকতেন। এক পর্যায়ে নাদিয়া সিলেটে তার বাবা-মা’র সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ স্থাপন করেন। সম্পর্কোন্নয়নের জন্য প্রায়ই নাদিয়া এবং আসিফ সিলেটে নাদিয়ার মা বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন।

নাদিয়ার বাবা মাছুম জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় নাদিয়া এবং আসিফ আমাদের সাথে ফোনে কথা বলেছে। কিন্তু হঠাৎ রাত ৮টার দিকে আসিফ আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায় যে নাদিয়া গলায় ফাঁস দিয়েছে’।

মাছুম জানান, স্ত্রীর কাছ থেকে মেয়ের ফাঁস দেয়ার কথা জানতে পেরে সাথে সাথে আসিফকে ফোন দিলে কিছু হয়নি জানিয়ে ফোন কেটে দেয়। পরক্ষণে আবারো ফোন দিলে আসিফ একবার বলে আত্মহত্যা আবার কিছু হয়নি বলে লাইন কেটে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। পরে রাত ১১টার দিকে গেন্ডারিয়া থানা থেকে ফোন দিয়ে নাদিয়া আত্মহত্যা করেছে বলে জানায় পুলিশ।

রহস্যজনক এ মৃত্যু নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এটিকে হত্যা বলে দাবি করছেন নাদিয়ার বাবা মাছুম। তার মেয়েকে হত্যা করেছে আসিফ, দাবি করছেন তিনি। মাসুম জানান, মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি গেন্ডারিয়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে বলেন, আসিফের বাবা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় টাকার বিনিময়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে নিয়েছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমূলক আচরণেরও অভিযোগ তুলেন তিনি।

প্রতিবেশিরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আসিফ বাসা থেকে বের হবার সময় নাদিয়াকে ভেতরে তালাবদ্ধ করে যেতেন। এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।

অপরদিকে এটিকে আত্মহত্যা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে বিস্তারিত জানা যাবে বলে স্বাধীন বাংলাকে জানিয়েছেন ওসি (তদন্ত) নূর আলম। এ ব্যাপারে গেন্ডারিয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে।