দিরাই(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধি:

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ৩নং রাজানগর ইউনিয়নে বন্যার্তদের জন্য সরকারি অনুদানের চালের বন্টন নিয়ে বিরোধের জেরে চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জুয়েল ও তার লোকদের হামলায় একই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য সাইদ আহমদ খছরু গুরুতর আহত হয়েছেন।

জানা যায়, গত শনিবার সন্ধ্যায় দিরাই শ্যামারচর সড়কের রাজানগর ও কালীনগর গ্রামের মধ্যবর্তী সুরমা বাজার নামক স্থানে এ হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে আহত মেম্বার সাইদ আহমদ খসরুকে  নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক সেবা দিয়ে তাকে রাত ১২ টার দিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

আহত ইউপি সদস্য সাইদ আহমদ খছরু জানান, প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনসহ বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে চেয়ারম্যানের সাথে তাঁর বিরোধ চলছিল। তিনি বলেন, সরকারি অনুদান ১০ টন আসছে।চেয়ারম্যানে ব্যক্তিগত ৩ টন নিজের কাছে রেখে দেয়। বাকি ৭ টন আমাদের ১০ জনকে দেয়, (২৫জুন)শনিবারে সন্ধ্যার কিছু আগে লিস্ট নিয়ে আমি অফিসে যাচ্ছিলাম।

পথে চেয়ারম্যানের সাথে দেখা হলে আমাকে ইশারা করে থামায়। আমি দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। কিছুসময় পর চেয়ারম্যানের ভাই আতা, রয়েল, আজাহারসহ ১০-১২ জন লোক সেখানে আসে। প্রথমে চেয়ারম্যান আমাকে মারতে শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গে বাকিরাও আমাকে রড দিয়ে পিটিয়ে পানিতে ফেলে দেয়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খসরু  আরও বলেন এটা তাদের পরিকল্পিতই ছিলো আমার অপরাধ আমি চেয়ারম্যান জুয়েল এর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা সরকারি রিলিফ নিয়ে সে দুর্নীতি করেছে আমাদেরকে সে বরাদ্দ থেকে দিতেই চায়না আমি কত মুখ বন্ধ করে রাখি আমার দ্বিতীয় অপরাধ হলো সে মনগড়া প্যানেল চেয়ারম্যান বানিয়ে ছিলো আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহুদ্বয় বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর তিনি মনগড়া প্যানেল বাতিল করেন। তার পর নিয়মতান্ত্রিক বৈধভাবে নতুন করে ভোটে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই আমি। আর এখান থেকেই আমার প্রতি তাঁর আক্রোশ বেড়ে যায়।

৭নং ওয়ার্ডের সদস্য গোলাপ মিয়া বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় অনিয়ম নিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একাধিক লিখিত অভিযোগ হয়েছে। এলাকার কজন জানান চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জুয়েল ও তাঁর ভাইদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে তারা আরো বলেন ছ’মাসের চেয়ারম্যানিতে জুয়েল সাধারণ মানুষের কাছে ঘৃণিত হয়ে উঠছেন তার সন্ত্রাসী আচরণ ভঙ্গির কারণে। চেয়ারম্যান এর এমন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় এলাকা জুড়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। এ ব্যাপারে দিরাই থানা ওসি সাইফুল ইসলাম জানান হামলার পর ঘটনা স্থলে পুলিশ পৌঁছেছে। দিরাই থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। জানা যায়, ঘটনার প্রতিবাদে (২৬জুন) রবিবার স্থানীয় ফাতেমানগর মাদ্রাসায় বৈঠক শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকার লোকজন।