স্বাধীন বাংলা প্রতিবেদক আইন-আদালত ও প্রশাসন নিরপেক্ষ আচরণ ভুলে এখন ক্ষমতাসীনদের ইশারায় চলে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘বর্তমান ভোটারবিহীন স্বেচ্ছাচারী সরকার দেশব্যাপী বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর গুম, খুনসহ দমন-পীড়নের ভয়াবহতা চালিয়ে যাচ্ছে।’ শুক্রবার (২২ জুলাই) এক বিবৃতিতে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নাওয়াজের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, নির্মম নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার দেশব্যাপী বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর গুম, খুনসহ দমন-পীড়নের ধারাবাহিকতায় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নাওয়াজকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তুলে নিয়ে যায়। একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে আটকে রেখে প্রায় ৫ ঘণ্টা নির্যাতন চালানো হয়। গণতন্ত্র ফিরানোর আন্দোলনে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজপথে সংগ্রাম করে যাচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে কারণ ছাড়াই বিএনপি’র নেতাকর্মীদেরবর্বর নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নাওয়াজ গত ১৮ জুলাই নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়ায় ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করছিল। এ সময় স্থানীয় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক সাজেদ, যুবলীগ নেতা আবদুর রহিম ও জীবন এর নেতৃত্বে ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রায় ৫ ঘণ্টা টক রেখে নির্মম নির্যাতন করে।
তিনি বলেন, গণধিকৃত অবৈধ সরকার দেশব্যাপী বীভৎস্য সন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। শুধুমাত্র সরকার বিরোধী কোন আওয়াজ যাতে না হয়। ছাত্রলীগ-যুবলীগের রক্তপিপাসু সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের কারণে দেশে নৈরাজ্যের ঘণ অন্ধকার নেমে এসেছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা একের পর এক এলোপাতাড়ি মারধর, চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা ও রক্তাক্ত জখম করার পর তাদের কোন বিচার না হওয়ার কারণে দ্বিগুন উৎসাহ নিয়ে একের পর এক সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে যতই চেষ্টা করা হউক বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে একবিন্দুও ছাড় দেবে না।’
বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নাওয়াজ এর ওপর হামলাকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান ও তার সুস্থতা কামনা করেন।
অপর এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গাইবান্ধা জেলাধীন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব মাহমুদুল প্রমানিক মাহামুদ ও ছাত্রদল নেতা মারুফ প্রমানিক সহ ২০ জন নেতাকর্মী ২০১৮ সালের মামলায় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আদালতে আত্মসমর্পন করে। আদালত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠায় এতে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, আইন-আদালত ও প্রশাসন নিরপেক্ষ আচরণ ভুলে এখন ক্ষমতাসীনদের ইশারায় চলে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সরকার চিরস্থায়ীভাবে কারান্তরীন করে রাখতে চায়। যুগে যুগে গণবিচ্ছিন্ন অত্যাচারী শাসকেরা যে রীতি অনুসরণ করে দেশ, মানুষ ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াকু মানুষকে উৎপীড়ণ করে যাচ্ছে। গাইবান্ধা জেলাধীন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব মাহমুদুল প্রমানিক মাহামুদ ও ছাত্রদল নেতা মারুফ প্রমানিক সহ ২০ জন বিএনপি নেতাকমীকে কারাগারে প্রেরণ তারই অংশ।
বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে গাইবান্ধা জেলাধীন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব মাহমুদুল প্রমানিক মাহামুদ ও ছাত্রদল নেতা মারুফ প্রমানিক সহ ২০ জন নেতাকর্মীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।