অবশেষে জট খুলতে যাচ্ছে পাকিস্তানের। অনেক জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে পাকিস্তানে জোট সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছে নওয়াজ শরিফ নেতৃত্বাধীন পিএমএল-এন ও পাকিস্তান পিপলস পার্টিসহ (পিপিপি) কয়েকটি দল। তবে নতুন এই সরকারেরও নেতৃত্বে থাকবেন শাহবাজ শরীফ। খবর ডন।
এত দিন পিএমএল-এন থেকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে নওয়াজ শরীফের কথা বলা হচ্ছিল। গতকাল রাতে হঠাৎ করে নওয়াজ প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ছোট ভাই শাহবাজকে মনোনীত করার ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মেয়ে মরিয়ম নওয়াজের নাম ঘোষণা করেন তিনি। মরিয়ম বলেন, ‘নওয়াজ শরীফ মনে করেন, তিনি শাহবাজ শরীফ এবং আমাকে পেছনে থেকে সমর্থন করতে পারবেন। তাই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে একযোগে জাতীয় ও চার প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় পরিষদের ২৬৬ আসনের মধ্যে ২৬৫ আসনে ভোট হয়। এতে কোনো দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। জাতীয় পরিষদে ইমরান খান-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯২, নওয়াজ শরীফের পিএমএল-এন ৭৫ ও বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পিপিপি ৫৪ আসন পেয়েছে। বাকি আসন পেয়েছে অন্য দলগুলো।
পাকিস্তানে সরকার গঠন করতে জাতীয় পরিষদে অন্তত ১৩৪ আসন দরকার। এ জন্য জোট সরকার গঠন করতে শুরু থেকেই পিপিপি এবং জাতীয় পরিষদে ১৭ আসন পাওয়া মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তানের (এমকিউএম-পি) নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে আসছিলেন পিএমএল-এন নেতারা।
গত রোববার লাহোরে পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির বাসায় দুই দলের নেতাদের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে দুই দল জানায়, পাকিস্তানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ঐকমত্যে পৌঁছেছে তারা। তবে জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে চলছিল আলোচনা। পিপিপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদে বিলাওয়ালকে চাওয়া হচ্ছিল।
এসব বিষয় নিয়ে গত সোমবার ও গতকাল পিপিপির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হয়। এরপর গতকাল বিলাওয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি নিজেকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থিতা থেকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। কেন্দ্রে পিএমএল-এনের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীকে সমর্থন দেবেন তাঁরা। তবে সরকারে থাকবেন না। কেন্দ্রে মন্ত্রিসভায় থাকার ইচ্ছাও নেই তাঁদের।
তাঁর ওই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর গতকাল রাতে বৈঠকে বসেন পিএমএল-এন, পিপিপি, এমকিউএম-পি ও পাকিস্তান মুসলিম লিগ-কায়েদের (পিএমএল-কিউ) নেতারা। ওই বৈঠক শেষে জোট সরকার গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।