অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে শ্রীমঙ্গলের ইউএনও
11, August, 2021, 4:10:39:PM
আবুজার বাবলা, শ্রীমঙ্গল: শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলাম সতর্ক করে বলেছেন, অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের আর রেহাই দেয়া হবে না। যারা নির্বিচারে কৃষি জমি ধ্বংস করছে, সড়ক, পরিবেশ বিনষ্ট করছে তাদের ছাড় দেয়া হবে না। তিনি বলেন, এক শ্রেনীর বিবেকহীন মানুষ সিন্ডিকেট করে উপজেলার বিভিন্ন স্থানের বিস্তীর্ণ কৃষি জমিতে গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলন করছে। এতে করে পরিবেশ মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। ভারী যানবাহনে বালু পরিবহনের কারণে এলাকার গ্রামীণ সড়ক বেহাল অবস্থায় পড়ছে।
ইউএনও নজরুল ইসলাম বলেন, এসব অপকর্মের সাথে জড়িতদের আমরা চিহ্নিত করেছি। তালিকা ধরে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বুধবার শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
গত ৯ আগষ্ট মোবাইল কোর্ট বসিয়ে উপজেলার ভুনবীর ইউপির বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ বালু জব্দ করে উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এদিন হাওড় এলাকায় শ্যালো মেশিন দিয়ে কৃষি জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের করায় আব্দুল ওয়াহিদ ওরফে হাওড় মেম্বর নামে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যকে বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করে আদালত। আব্দুল ওয়াহিদ ভুনবীর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদের ভাজিতা এবং টানা ৩বারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য বলে জানা গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তার নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় ফিসারি করার নাম করে হাওড় ও গ্রামের কৃষি জমি থেকে নির্বিচারে মূল্যবান সিলিকা বালু উত্তোলন করে অবৈধ বেচা কেনা করে আসছিলেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতে তার ১ মাসের কারাদ-াদেশের ঘটনায় গোটা উপজলা জুড়ে তোলপাড় সৃস্টি হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অনেক অবৈধ বালু ব্যাবসায়ীরা গ্রেফতার আতংকে গা ঢাকা দিতে শুরু করে।
এ ঘটনা উল্লেখ করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, এখন থেকে কাউকে আর বালুর অবৈধ কারবার করতে দেয়া হবে না। আমাদের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান মহোদয় এবিষয়ে শূন্য সহনশীলতা অবলম্বন করেছেন। যেই হোক না কেন অবৈধ বালু কারবারে যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সরকারী এই মূল্যবান খনিজ সম্পদ লোপাটকারীদের চিহ্নিত ও তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এই তালিকা ধরে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
নজরুল ইসলাম জানান, অনেক স্থানে প্রশাসনকে ম্যানেজ করার মিথ্যা প্রচার চালিয়ে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ থেকে জনগণকে বিভ্রান্ত না হাওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন প্রশাসন তাদের বিভ্রান্তি ছড়ানোর জবাব দেবে।
নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে দীর্ঘদিন ধরে মৌলভীবাজার জেলার ৫২টি এর শ্রীমঙ্গল উপজেলার ২৯টি সিলিকা বালু মহাল ইজারা বন্দোবস্ত স্থগিত ছিল। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি মহল সিন্ডিকেট গড়ে অবৈধভাবে মূল্যবান বালু উত্তোলন করে আসছিলো। এ নিয়ে শৃংখলা ফেরাতে সম্প্রতি ভূমি মন্ত্রণালয় উদ্যেগ গ্রহণ করে। এ প্রক্রিয়া সম্প্রতি ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিদর্শনা মোতাবেক জেলা প্রশাসন কর্তৃক উপজেলার ২৯টি সিলিকা বালু মহাল ১৪২৮-১৪২৯ বাংলা ২ সনা লীজ বন্দোবস্ত দেয়া হয়। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে মহালগুলো লীজ গ্রহীতাদের কাছে হস্তান্তর করার৷ বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এতে করে উপজেলায় অবৈধ বালু উত্তোলন নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।