বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের ১০৯তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে সুনামগঞ্জের দিরাই উজান ধল মাঠে শুরু হলো দুই দিন ব্যাপী ‘শাহ আবদুল করিম লোক উৎসব ২০২৪’। উপজেলার কালনী নদীর তীরের এই মাঠে কালোজয়ী লোক গানের স্রষ্টা একুশে পদক প্রাপ্ত বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমকে গানে গানে শ্রদ্ধায় স্মরণ করবেন তার ভক্ত-অনুসারীরা।
শাহ আবদুল করিম পরিষদ আয়োজিত লোকউৎসব এবারও দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের সহযোগিতায় করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার(১৫ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় লোকউৎসব শুভ উদ্বোধন করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক রাশেদ ইকবাল চৌধুরী। বাউল সম্রাট পুত্র শাহ নূর জালাল এর সভাপতিত্বে ও দিরাই তথ্য সেবা কর্মকর্তা পারমিতা দাসের সঞ্চালনায়, অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, শাহ আব্দুল করিম স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক দ্রুপদ চৌধুরী নূপুর।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান খোন্দকার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনি রায়, ইউপি চেয়ারম্যান একরার হোসেন, আলী আহমেদ, বিকাশ কোম্পানি ভাইস প্রেসিডেন্ট এন্ড হেড অফ ডিপার্টমেন্টের হুমায়ুন কবির, সুনামগঞ্জ জেলার প্রথম আলোর স্টাফ রিপোর্টার খলিলুর রহমান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হক, ভাটি বাংলা শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক পরিষদের সদস্য আবদাল আলম চৌধুরী প্রমুখ।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের সৃষ্টি ও তার কর্মকে বাঁচিয়ে রাখতে উজানধলে শাহ আব্দুল করিম সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। বাংলাদেশ সরকারের সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করবে। এছাড়া সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় হাসান রাজা, রাধারমণ দত্ত ও দুর্বিন শাহের স্মৃতি ধরে রাখতে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তুলবে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বাউল সম্রাট আব্দুল করিম স্মৃতি সংসদ দুদিনব্যাপী লোক উৎসবের আয়োজন করেছে। জেলা প্রশাসন এই আয়োজনে সহযোগিতা করে যাচ্ছে এবং আগামীতেও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’ সমবেত সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয় দুদিনব্যাপী শাহ আব্দুল করিম লোক উৎসব। বিগত ১৫ বছর ধরে আয়োজিত এ উৎসবে এবারও বাউলসম্রাটের ভক্ত-অনুরাগীরা তাঁর সৃষ্টিকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দিতে, তাঁর গান দিয়ে তাঁকেই স্মরণ করবেন। বসন্তের মাতাল হাওয়া আর ভক্তিতে পূর্ণ হয়ে উজানধল গ্রামের আনাচেকানাচে বেজে উঠবে আবদুল করিমের সুর। স্থানীয় মানুষের পাশপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশের বাইরে থেকেও আসা ভক্ত-সুধীজনেরা অংশগ্রহনে মুখোড়িত হয়ে উঠে এই লোকউৎসব।