লাইফস্টাইল ডেস্ক : সুস্থ থাকার জন্য নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। আর সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় সবাই ঘরবন্দি অবস্থায় আছেন। এমনই একটি সময়ে এবার পবিত্র রমজান পালিত হচ্ছে বলে সুস্থতার জন্য আমাদের আরও বেশি সতর্ক থাকা চাই। আর তাই, নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবারের রুটিন। এছাড়াও রমজানে সুস্থতা বজায় রাখতে প্রয়োজন রুটিন মেনে চলার একনিষ্ঠতা। আপনাদের রমজানের রোজা সুস্থ-সবল দেহ নিয়ে পালনের জন্য রইলো পরামর্শ।
খাবার গ্রহণে সতর্ক থাকুন : সারাদিন না খেয়ে থেকেছেন তাই ক্ষুধা থাকবে এটা স্বাভাবিক। তাই বলে সব খাবার ইফতারের সময় একসঙ্গে খাওয়া ঠিক নয়। রোজা ভাঙবেন এক বা তিনটি শস্যদানা পরিমাণ যেকোনো কিছু দিয়ে। সেটা খেজুরও হতে পারে। এরপর নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি পান করে নামাজ আদায় করে নিন। এসময়ের মধ্যে পাকস্থলীকে বিশ্রাম নিতে দিন যেন সে পুনরায় খাবার গ্রহণে উদগ্রীব থাকে। নামাজ আদায় শেষে স্যুপ বা সবজি সালাদ খেতে পারেন যা আপনার ক্ষুধা নিবারণ করতে সক্ষম। একইসঙ্গে সামান্য ক্যালরি আছে এমন কিছু খেতে পারেন। এরপর আপনি প্রোটিনযুক্ত মূল খাবার (গরুর মাসং, মুরগির মাংস বা মাছ) গ্রহণ করুন। সঙ্গে রাখতে পারেন ভাত বা রুটি। তবে এগুলোর কোনোটাই অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া যাবে না। এরপর তারাবীহর নামাজ শেষে ফল বা গরুর দুধ পান করতে পারেন। এরপর মধ্যরাতে কম পরিমাণ সবজি, ভাত বা জুস খেতে পারেন। সেহরিতে খাবারের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি আপনাকে সারাদিনের জন্য শক্তি যোগাবে। তাই এসময় অবশ্যই ফাস্ট ফুড এড়িয়ে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করুন।
ইফতার ও সেহরিতে মিষ্টান্ন রাখুন : মিষ্টি জাতীয় খাবার কিছু না কিছু অবশ্যই রাখবেন ইফতারের টেবিলে। সম্ভব হলে সেহেরিতেও রাখুন মিষ্টান্ন। খেজুর রমজানে শরীরের ভীষণ বন্ধু এক খাবার। কাজেই ফল এবং মিষ্টি উপাদান হিসেবেও খেজুর বেছে নিন খাদ্য তালিকায়। দুধ-চাল আর বাদামের মিশ্রণে সাধারণ পায়েসও মজাদার খাবার হতে পারে ইফতারে।
কড়া পানীয়কে না বলুন : কড়া পানীয়ের বদলে হালকা পানীয় গ্রহণ করুন এই এক মাস! চা ছাড়া দিন চলে না যাদের তারা লাল চায়ের অভ্যাস করুন। এছাড়া কোমল পানীয় এড়িয়ে চলবেন।
রোজায়ও চলুক ব্যায়াম : রমজানে সুস্থতা পালনে শরীর চর্চার সঠিক সময় হচ্ছে ইফতারের ঠিক পূর্বে। তাই, ইফতারের ঘণ্টা দু-এক আগে নিজের শরীর চাঙ্গা রাখতে হালকা ব্যায়াম বা যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। ইফতারের পর ১৫-২০ মিনিটের জন্য বাইরে হেঁটে আসতে পারেন। তবে কখনোই ভারী ব্যায়াম করবেন না।
দুপুরের পর একটু ঘুমান : রোজার সময় প্রতিদিন দুপুরের পরে একটু ঘুমিয়ে নিন। তাহলে আর রোজার ক্লান্তিতে আপনার শরীর ভেঙে পড়বে না। জোহরের নামাজের পর থেকে আছরের নামাজের মধ্যবর্তী সময়টি দিবানিদ্রার সবচেয়ে ভালো সময়।
ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপে করণীয় : উচ্চরক্তচাপ যাদের আছে তারা রোজা রাখতে পারেন। তবে তাদেরকে নিয়মিত ওষধ খেতে হবে। তাহলেই তারা রোজা রাখতে পারবেন। ইউরিক এসিড থাকলে ডালের তৈরি খাবার কম খেতে হবে। এছাড়া যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদেরকে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ওষুধ খাওয়ার নতুন তালিকা করবেন। শরীরের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখার ওপর গুরুত্ব দিন। এসব বিষয় খেয়াল রাখলে রমজানেও আপনার শরীর-স্বাস্থ্য পুরোপুরি ফিট থাকবে।