ক্রীড়া ডেস্ক : দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে একই দিনে মাঠে নেমেছিল আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। মেসির আর্জেন্টিনা ড্র করলেও জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে নেইমারের ব্রাজিল।
বাংলাদেশ সময় বুধবার ভোরে কলম্বিয়ার মাঠে খেলতে গিয়ে ২-২ গোলে ড্র করেছেন লিওনেল মেসিরা। অন্যদিকে প্যারাগুয়ের মাঠে নেইমারের জাদুকরী পারফরম্যান্সে স্বাগতিক দলকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিল।
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই এগিয়ে যায় ব্রাজিল। এ সময় গ্যাব্রিয়েল হেসুসের পাস থেকে প্রথম গোলটি করেন নেইমার। এরপর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। তবে দুই দলেরই জমাট রক্ষণের কারণে গোলের দেখা মেলেনি।
প্রথমাধের যোগ করা সময়ে বল জালে জড়িয়েছিলেন রিচার্লিসন। অফসাইডের থাকায় গোলটি বাতিল হয়ে যায়। অন্যদিকে এডারসনের দৃঢ়তায় সমতাসূচক গোল পায়নি প্যারাগুয়ে।
ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে নেইমারের কাছ থেকে বল পেয়ে কোনাকুনি শট নেন লুকাস পাকুয়েতা। পোস্টের ভেতর দিকে বল লেগে জড়ায় জালে। যার ফলে মেলে ২-০ গোলের জয়।
জাতীয় দলের জার্সিতে নেইমারের এমন উদ্ভাসিত পারফরম্যান্সের সুবাদে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে জয়যাত্রা অব্যাহত রাখল সেলেকাওরা। লাতিন আমেরিকান অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের অষ্টম রাউন্ডের খেলা শেষে ছয় ম্যাচের সবকয়টি জিতে পূর্ণ ১৮ পয়েন্ট পেয়েছে ব্রাজিল। একইসঙ্গে টেবিলের শীর্ষস্থানটি আরও সুসংহত করেছে তারা।
অন্যদিকে ম্যাচের প্রথম আট মিনিটে দুই গোল করেও কলম্বিয়ার সঙ্গে ড্র করেছে আর্জেন্টিনা। ক্রিস্তিয়ান রোমেরো ও লেয়ান্দ্রো পারেদেসের গোলে আর্জেন্টিনা এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান কমান লুইস মুরিয়েল। আর শেষ দিকে সমতা টানেন মিগুয়েল বোরহা।
মূল্যবান দুটি পয়েন্ট হারানোর ম্যাচে বড় ধাক্কাও খেয়েছে তারা। চোট পেয়েছেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেস এবং আঘাতটা বেশ গুরুতর বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
আর্জেন্টিনা প্রথম সাফল্য পায় ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে। ডান দিক থেকে রদ্রিগো দে পলের দারুণ ফ্রি কিকে লাফিয়ে হেডে দলকে এগিয়ে নেন রোমেরো।
পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ হওয়া গোলে দায় আছে স্বাগতিক রক্ষণের। তবে পারেদেসের নৈপুণ্যও কম নয়। ডি-বক্সে মেসি শট নিতে ব্যর্থ হওয়ার পরও বিপদমুক্ত করতে পারেনি কেউ। বল বুক দিয়ে নামানোর ফাঁকে প্রতিপক্ষের দুই জনের মাঝ দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন পারেদেস। এরপর লাউতারো মার্তিনেসের বাড়ানো ফিরতি পাস ধরে আরেকজনকে কাটিয়ে কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন পিএসজি মিডফিল্ডার।
প্রথমার্ধেই মূল গোলরক্ষককে হারানোর ধাক্কাটা খায় আর্জেন্টিনা। ৩৪তম মিনিটে বল ধরতে গিয়ে প্রতিপক্ষের ইয়েরি মিনার সঙ্গে ধাক্কা লেগে বেকায়দায় পড়ে মাথায় ও কাঁধে আঘাত পান এমিলিয়ানো মার্তিনেস। পাঁচ মিনিটেরও বেশি সময় মাঠেই তার চিকিৎসা চলে, পরে স্ট্রেচারে করে তাকে বাইরে নেওয়া হয়।
৫৮তম মিনিটে গোল পেতে পারতেন মেসি। তবে তার দারুণ ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে কোনোমতে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান অসপিনা। বল তার হাত ছুঁয়ে পোস্টে লেগে বাইরে যায়। ৭২তম মিনিটে ডি-বক্সে জায়গা বানিয়েও উড়িয়ে মেরে হতাশ করেন মুরিয়েল।
পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে আসে আর্জেন্টিনাকে হতভম্ব করে দেওয়া গোলটি। ডান দিক থেকে হুয়ান কুয়াদরাদোর ক্রসে হেডে গোলটি করেন বোরহা। বদলি গোলরক্ষক আগুস্তিন মার্চেসিন ঝাঁপিয়ে হাত লাগালেও বলের গোললাইন পেরিয়ে যাওয়া ঠেকাতে পারেননি।
তিনটি করে জয়-পরাজয়ে পাওয়া ১২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আর্জেন্টিনা।